নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
১০ বছর ধরে শ্রমিক আবাসন মেরামত হয় না বলে শ্রমমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানালেন তৃণমূল শ্রমিক নেতা। বুধবার রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী পূর্নেন্দু বসু জলপাইগুড়ির সরস্বতীপুর চা বাগান পরিদর্শনে যান। বাগানের বাংলোতে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন বাগানের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সুভাষ করোয়া। বাগানের আধিকারিকদের সামনেই তৃণমূল নেতা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “শ্রমিকদের থাকার ঘরগুলি দশ বছর ধরে মেরামত করা হয় না। আমরা বাগান কর্তৃপক্ষকে বলেছি যে প্রতিবছর অন্তত দশটা করে ঘর পাকা করে দিলেই ধীরে ধীরে সমস্যা মিটে যায়। বাঁশ, দরমা দিয়ে তৈরি ঘরগুলি জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। পাশের জঙ্গল থেকে হাতি এসে মাঝেমধ্যে ঘর ভেঙে দেয়।” |
সরস্বতীপুর চা বাগানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মন্ত্রী। ছবি: সন্দীপ পাল। |
বাগানের পাশ দিয়ে একটি রাস্তা তৈরিতে বন দফতর বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে শ্রমিক নেতার দাবি, রাস্তা তৈরি হতে না পারায় বাগান থেকে স্কুল বা অন্যত্র যেতে শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শ্রমিক নেতার অভিযোগ শুনে তাঁকে আশ্বস্ত করেন শ্রমমন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। বাগানের ম্যানেজার মহম্মদ আলি মজুমদার মন্ত্রীকে বলেন, “আমরাও বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে সবসময়ই কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী। বাগানের পাশে রাস্তা তৈরি নিয়েও বন দফতরকে বারবার জানানো হয়েছে।” এদিন সরস্বতীপুর চা বাগানে আসার আগে জেলা শাসকের দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকেও বিভিন্ন চা বাগানে শ্রমিকদের আবাসন, পানীয় জল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শ্রমমন্ত্রী। তিনি বলেন, “চা বাগানের মালিকদের যা যা করনীয় অনেকক্ষেত্রেই মালিকরা তা করছেন না। বিভিন্ন বাগানে পানীয় জল, আবাসন নিয়ে সমস্যা রয়েছে। সেগুলি নিয়ে রাজ্য সরকার মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে।” চা শ্রমিকদের বকেয়া পিএফ পরিশোধ করা নিয়েও রাজ্য সরকার অনড় বলে জানিয়ে শ্রমমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরেই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে। জলপাইগুড়ির বিভিন্ন বন্ধ চা বাগানকে অগ্রাধিকার দিয়ে খুলেছে নতুন সরকার। বিভিন্ন চা বাগান মালিক শ্রমিকদের ন্যায্য পিএফের টাকা বকেয়া রেখেছেন। সেই বকেয়া উদ্ধারে রাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নেবে।” এদিন জলপাইগুড়িতে পৌঁছে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের শ্রম দফতরের বিভিন্ন আধিকারিকদের নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক করেন মন্ত্রী। তার পরে বাগান পরিদর্শনে যান। বাগানের হাসপাতালটিও ঘুরে দেখেন তিনি। বাগানের শ্রমিক লাইনের আবাসন দেখতে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। মন্ত্রী বলেন, “অনান্য বাগানের তুলনায় সরস্বতীপুর চা বাগানে শ্রমিকদের সুযোগসুবিধে বেশ ভালই। বাগানের শ্রমিক হাসপাতালটি উন্নত মানের। বাগানে নতুন ক্রেশ তৈরির কাজ চলছে। কারখানাটিও ভাল। তবে শ্রমিক আবাসন পাকা করা নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” |