যে অভিযুক্ত ছাত্রদের ক্ষমা চাওয়ার কথা ছিল তাঁরা কেউ এলেন না। তাঁদের অপরাধের জন্য বকলমে ক্ষমা চাইলেন শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির (বেসু) অভিযুক্তদের সহপাঠীরা। তবে অভিযুক্ত ছাত্রদের শাস্তি মকুবের কোনও প্রশ্নই ওঠে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বেসু কর্তৃপক্ষ। বেসুর উপাচার্য অজয় রায় বলেন, “অভিযুক্ত ছাত্রদের শাস্তি দানের পরদিনই ১০০০ ছাত্রছাত্রী ক্ষমা চেয়ে সই করা চিঠি আমাকে দেয়। এ দিনের সরাসরি ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অবশ্য অভিনব। তবে দোষী ছাত্রদের শাস্তি মকুবের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।”
বেসুর ইনস্টিটিউট হলে বুধবার সন্ধ্যায় সভা ডেকে বেসু কর্তৃপক্ষ ও এলাকার বাসিন্দাদের কাছে শ’খানেক ছাত্রছাত্রী ক্ষমা চেয়ে দোষীদের শাস্তি মকুবের আর্জি জানান। অভিযুক্ত ছাত্রদের হয়ে ক্ষমা চেয়ে তাঁরা জানান, এ বার থেকে বেসুর ছাত্রছাত্রীরা এলাকাবাসীদের উন্নয়নের জন্য সচেষ্ট হবেন। গরিব মানুষদের জন্য তাঁরা কাজ করবেন। এলাকায় একটি দাতব্য চিকিৎসালয় খুলবেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে প্ল্যাকার্ড টাঙিয়ে তাঁরা সেখানে লেখেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল করে। সব ভুলে আমাদের ক্ষমা করা হোক।’ এ দিনের সভায় স্থানীয় কিছু মানুষ এলেও ঘটনার দিনে আক্রান্ত স্থানীয় বাসিন্দারা আসেননি। তবে এসেছিলেন সে দিনের ঘটনায় আক্রান্ত, শিবপুর থানার দুই সাব-ইন্সপেক্টর সুলতান মামুদ ও সুমিত চক্রবর্তী। গত ১২ এপ্রিল রাতে বেসুর কয়েক জন ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তাঁরা মত্ত অবস্থায় স্থানীয় গঙ্গার ঘাট এলাকার কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালান ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাতাহাতি করেন। পুলিশ এলে দুই পুলিশকর্মীকে তাঁরা মারধরও করেন বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই দুই পুলিশকর্মীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় ছ’জন ছাত্র গ্রেফতার হন। পরের দিনই অবশ্য তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। তার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করেন বেসু কর্তৃপক্ষ। ১৬ তারিখ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ছাত্রদের শাস্তি ঘোষণা করেন। এক ছাত্রকে চিরকালের জন্য, দু’জনকে দু’বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ছ’জন ছাত্রকে তিনটি সেমেস্টার পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ন’জন অভিযুক্ত ছাত্রের অভিভাবকদের ডাকা হয়। অভিযুক্ত বেশিরভাগ ছাত্রই চতুর্থ বর্ষের বলে জানিয়েছেন বেসু কর্তৃপক্ষ। |