রাজ্যে ‘পরিবর্তনে’র পর প্রথম পুরভোটে নিজেদের মধ্যে ‘সার্বিক ঐক্য’ গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করলেন বামফ্রন্টের নেতারা। সেই লক্ষ্যেই বুধবার আলিমুদ্দিনে ফ্রন্টের বৈঠক বসেছিল।
হলদিয়া, দুর্গাপুর, নলহাটি, ধূপগুড়ি, পাঁশকুড়া ও কুপার্স ক্যাম্প এই ছ’টি পুরসভায় ভোট ৩ জুন। বৈঠকের পর ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “অতীতে এই পুরসভাগুলির ভোটে শরিকদের মধ্যে সার্বিক ঐক্য হয়নি। এ বার যাতে সার্বিক ঐক্য হয়, তা সকলকে দেখতে হবে। প্রার্থী দেওয়া থেকে প্রচার সব কিছুই ঐক্যবদ্ধ ভাবে করতে হবে।” দুই তৃণমূল বিধায়কের মৃত্যুতে বাঁকুড়া (সদর) ও দাসপুর বিধানসভা আসনে উপ নির্বাচন হবে ১২ জুন। সেখানেও ‘ঐক্যবদ্ধ’ প্রচারের প্রস্তুতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার এক বছরের মাথায় এই প্রথম পুরভোট হচ্ছে রাজ্যে। আবার মমতা-সরকারের নানা কাজের সমালোচনার উপর নির্ভর করে বামফ্রন্ট কিছুটা ‘ঘুরে দাঁড়াতে’ পারল কিনা, তারও পরীক্ষা এই ভোটেই। পাঁচ বছর আগে ফ্রন্টে ভোট কাটাকাটিতে বিরোধীরা জিতে গিয়েছিল নলহাটি ও পাঁশকুড়া। এ বার যাতে তা না-হয়, তার জন্য শরিক নেতাদের ‘সতর্ক’ করেন বিমানবাবু। শরিক নেতারাও আশ্বাস দেন, কোনও ভাবেই ‘গোঁজ’ প্রার্থী দেওয়া হবে না। তবে, এর পরেও দুর্গাপুর বা হলদিয়ার মত পুরসভা ধরে রাখা যাবে কিনা, তা নিয়ে বাম নেতাদের সন্দেহ রয়েছে। ২০০৭ সালে এই ছ’টি পুরসভায় ভোটের সময় বিধানসভায় ফ্রন্টের আসন ছিল ২৩৫। পুরভোটে সিপিএম, সিপিআই এমনকী, কিরণময় নন্দের তৎকালীন সোশ্যালিস্ট পার্টিও অন্য শরিককে আসন ছাড়েনি। ফলে শরিকি লড়াইয়ে হারাতে হয় দু’টি পুরসভা। অন্যত্রও ফল খুব ভাল হয়নি। রাজ্য সরকারের এক বছরের কাজ নিয়ে পুস্তিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বামফ্রন্টের বৈঠকে। বিমানবাবু পরে বলেন, “পুস্তিকা প্রকাশের দিন এখনও ঠিক হয়নি।” ১৯৭৭ সালে বামেরা ক্ষমতায় আসার পর এক বছরের কাজ এবং মমতা-সরকারের এক বছরের কাজ নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করে ওই পুস্তিকা প্রকাশ করা হবে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বামফ্রন্ট যে জাঠা বার করছে, প্রচণ্ড গরমের কারণেই আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তার দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য যুবকল্যাণ দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মৌলালি যুব কেন্দ্রের গ্রন্থাগারের নাম প্রয়াত দীনেশ মজুমদারের পরিবর্তে স্বামী বিবেকানন্দের নামে করা হবে। দীনেশবাবু সিপিএমের নেতা। এর বিরোধিতা করে বিমানবাবু বলেন, “এতে বিবেকানন্দকে বড় করা হয়, নাকি খাটো করা হয় জানি না! এর আগে ইন্দিরা ভবনের নামও পরিবর্তন করে নজরুলের নামে করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাতে নজরুল বড় হননি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে নাম পরিবর্তন করার মানসিকতা ঠিক নয়।” তবে, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের নাম স্বামী বিবেকানন্দের নামে করার সিদ্ধান্তে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই বলে বিমানবাবু জানান। |