দুর্যোগে মৃত ৪
চার ইউনিট স্তব্ধ, বিদ্যুতের ঘাটতি সামলে দিল ঝড়বৃষ্টি
নেক সময়েই বিদ্যুৎ-বিপর্যয়ের কারণ হয়ে ওঠে দুর্যোগ। তার ছিঁড়ে, খুঁটি উপড়ে, আস্ত গাছ বা ডাল ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় ঝড়। বুধবার বিদ্যুতের বিপদে বন্ধুর ভূমিকা নিল ঝড়বৃষ্টি।
সাগরদিঘি ও সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে হঠাৎই যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় এ দিন দুপুরে চারটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এলাকায় ঘাটতি হয় ৮০০-৯০০ মেগাওয়াট। তার জেরে কোনও কোনও অঞ্চলে লোডশেডিং হয়। বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ-সহ বেশ কয়েকটি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা দেখা দেয়। তখনই আসরে নেমে পরিস্থিতি অনেকটা সামলে দেয় ঝড়বৃষ্টি।
রাজ্যের বিদ্যুৎকর্তাদের দাবি, ওই সব জেলায় এ দিন দুপুরের পরে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটা কমে যায়। ফলে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা বিশেষ ভোগ করতে হয়নি। রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম সূত্রের খবর, সাগরদিঘির দু’টি ইউনিট এবং সাঁতালডিহির দু’টি ইউনিটে হঠাৎই ‘টিউব লিকেজ’ হয়ে যায়। সেগুলির মধ্যে সাগরদিঘির একটি ইউনিট সন্ধ্যায় ফের চালু হলেও বাকিগুলো রাত পর্যন্ত সারানো যায়নি। আজ, বৃহস্পতিবার বিকল ইউনিটগুলি সারানোর চেষ্টা হবে বলে নিগমকর্তারা জানান। সারাতে না-পারলে ব্যাপক বিদ্যুৎ-ঘাটতি হবে। তখন বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় লোডশেডিং করা ছাড়া উপায় থাকবে না। ফের ঝড়বৃষ্টি না-হলে ভোগান্তি সামাল দেওয়া মুশকিল হতে পারে।
ঝড়ে বিধ্বস্ত কুঁড়েঘর থেকে সরানো হচ্ছে লক্ষ্মীপ্রতিমা। বুধবার গাইঘাটায়। ছবি: পার্থসারথি নন্দী
মঙ্গলবারের ঝড়বৃষ্টি বিদ্যুৎ-বিপর্যয়কে অনেকটা আড়াল করলেও দুর্যোগে প্রাণহানি-সহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। বজ্রাঘাতে এবং বাড়ি ধসে মৃত্যু হয়েছে অন্তত চার জনের। এ দিন দুপুরের পরে হুগলি, নদিয়া, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ-সহ কয়েকটি জেলার উপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে যায়। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। দুর্যোগে বহু বাড়ি ভেঙে পড়ে। উপড়ে যায় অজস্র বিদ্যুতের খুঁটি। অনেক জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে। ক্ষতি হয় চাষেরও। ঝড়ে এবং শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি ব্লকে। মোরগ্রাম, কাবিলপুর, পাটকেলডাঙা, বালিয়া, বোখরা-১ পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়। বড় বড় শিলার আঘাতে ক্ষতি হয় ধানগাছের। সাগরদিঘির বিডিও সিদ্ধার্থ গুঁই বলেন, “পাঁচটি অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ে বহু মাটির বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ধানেরও। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” সুতির বাহাগলপুরে প্রবল ঝড়ের সময়েই বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ফরিদা বিবি (২৮) নামে এক মহিলার। আহত হন তাঁর স্বামী আনসার আলি। বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে বীরভূমের মুরারই থানার রামপুর গ্রামের এক ব্যক্তিরও। সামসুল শেখ (৪৫) নামে ওই ব্যক্তি বাজারে মধু বিক্রি করে ফিরছিলেন। তখনই বাজ পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। সাঁইথিয়াতেও হরপলসা গ্রামে বাজ পড়ে প্রাণ হারিয়েছে জামিরুল শেখ (১৯) নামে এক তরুণ। ঝড়ের দাপটে বর্ধমানের কেতুগ্রামে বাঁশড়া গ্রামে ঘরের দেওয়াল ধসে মৃত্যু হয় পরিতোষ মাঝি নামে দু’বছরের একটি শিশুর। আহত হয়েছে সাত বছরের দীপা মাঝি এবং ছ’বছরের সুমন মাঝি। তাদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.