|
|
|
|
ঝড়ে বিধ্বস্ত গাইঘাটার গ্রাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গাইঘাটা |
মিনিট দশেকের ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল গাইঘাটার চাঁদপাড়া ও ফুলসরা পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গ্রাম। অন্তত ২০ জন জখম হয়েছেন। বেশ কিছু গাছ ভেঙে পড়েছে। যার জেরে যশোহর রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বেশ কিছু ক্ষণ। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি আংশিক বা পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধে ৭টা ১০ মিনিটে ঝড় শুরু হয়। মাত্র মিনিট দশেক স্থায়ী হয়েছে। তবে রেশ ছিল প্রায় মিনিট পঁচিশ। কিন্তু তাতেই ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। চাঁদপাড়া ও ফুলসরা পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে কয়েকশো বাড়ি ভেঙেছে। অনেক পরিবারকে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে হয়েছে। ধান, কলা ও পটল চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যশোহর রোডের উপরে চাঁদপাড়া থেকে দোগাছিয়ার মধ্যে বেশ কিছু বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। তাতে জখম হয়েছেন মিনিট্রাকের এক চালক। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে।
ঘণ্টা দেড়েক যশোহর রোডে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা পরিষ্কার করেন।
বুধবার সকালে বনগাঁর মহকুমাশাসক অভিজিৎ ভট্টাচার্য এবং গাইঘাটার বিডিও মানস হালদার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। অভিজিৎবাবু বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। ত্রাণেরও ব্যবস্থা করা হবে। এ দিন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাসও এলাকায় এসে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। |
|
ছবি: পার্থসারথি নন্দী। |
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বহু বাড়ির টিনের চাল অনেকটা দূরে গিয়ে পড়েছে। চালি ভেঙে গিয়েছে। কোনও কোনও বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। সুরজিৎবাবুর কথায়, “চাঁদপাড়া, ফুলসার, ডুমা এবং কালুপুর পঞ্চায়েতে বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জখম হয়েছেন ২০ জন। মঙ্গলবার রাতেই ফুলসরা এলাকায় একটি চিকিৎসক দল পাঠানো হয়। তারা সারা রাত কাজ করেছে।” এ দিন দেখা গেল, মাঠে পাকা ধান একেবারে শুয়ে পড়েছে। কলাবাগানেরও সেই দশা। খোলা আকাশের নীচে একে রান্না করছেন।
ফুলসরার বাসিন্দা অরুণ মণ্ডলের কথায়, “হঠাৎ চারি দিক কালো হয়ে এল। সঙ্গে বিপুল বেগে ঝোড়ো হাওয়া। ঘরে ছিলাম। টিনের চাল উড়ে গেল। টালি ভেঙে পড়ল। ভয়ে শৌচাগারে গিয়ে আশ্রয় নিই।” এক মহিলা জানালেন, ঝড়ে বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে মনে করে পরিবারের সকলে মিলে বেরিয়ে আসেন। তারপরেই ঘর-শুদ্ধু উড়িয়ে নেয় ঝড়ে! পাঁচপোতা গ্রামের বুদ্ধদেব বিশ্বাস এবং ভোলা বিশ্বাসের টালি-টিনের চালের ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রফুল্ল বিশ্বাস টালির চাল ভেঙে মাথায় পড়ায় চোট পেয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই দিনমজুর। তাঁরা এ দিন কাজে যেতে পারেননি। পাঁচপোতা গ্রামের ছাত্রী সোমা কীর্তনিয়া জয়েন্ট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বললেন, “ঝড়ে বইপত্র সব উড়ে গিয়েছে।” বিধায়ক তাঁকে বই কেনার জন্য ৫০০ টাকা দিয়ে গিয়েছেন। |
|
|
|
|
|