এ বার নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুন বসিরহাটে
ফের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটল বসিরহাটে।
বুধবার সকালে শ্রীনগর গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা নবম শ্রেণির ছাত্রী সাহিনা সুলতানার (১৬) দেহ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে পটল খেতে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। মেয়েটির এক সহপাঠিনী, তার মা-সহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করা যাবে বলে মনে হচ্ছে।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, গণধর্ষণের পরে সাহিনাকে মারধর করা হয়। তাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে।
সাহিনা।
মঙ্গলবারই বসিরহাটের ঘোড়ারস দক্ষিণপাড়ার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মারুফা সর্দারের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে শেখ বদরুল ইসলাম নামে এক যুবককে। তার মা-কেও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে ধরেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির পাশের মুদির দোকানে গিয়েছিল বেলে ধান্যকুড়িয়া গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সাহিনা। কিছু ক্ষণ পরেই শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থামার পরে সন্ধে নেমে এলেও মেয়ে ফিরছে না দেখে খুঁজতে বেরোন মা রেহেনা বিবি। রাতে সাহিনার এক সহপাঠিনীর বাড়ি গিয়েও খোঁজ করেন আত্মীয়েরা। ওই মেয়েটির দেওয়া সূত্র ধরে আরও খোঁজাখুঁজি চলে। কিন্তু কোনও খোঁজ মেলেনি ওই কিশোরীর।
তদন্তে পুলিশ কুকুর।
বুধবার ভোরে উত্তরপাড়ার গ্রামেই পটল খেতের মধ্যে সাহিনার ক্ষত-বিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ আসে কুকুর নিয়ে। মাঠের মধ্যে একটি পাম্প-ঘরের পাশে গিয়ে থমকে যায় কুকুর। ওই জায়গায় একটি জলার মধ্যে থেকে রক্ত-মাখা বাঁশের চটা উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দোকানে কেনাকাটা সেরে পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা হয়েছিল সাহিনার। সে-ই তাকে কোনও ভাবে মাঠের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিল আরও কয়েক জন। সকলে মিলে মেয়েটির উপরে অত্যাচার চালায়। পরে চটা দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখে তদন্তকারী অফিসারেরা মনে করছেন, প্রবল আক্রোশে মারধর করা হয়েছিল মেয়েটিকে। পর পর দু’টি মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বসিরহাটে। অপরাধীদের ‘কঠোর শাস্তি’র দাবিতে বুধবার দুপুরে বেঁকিতে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে জনতা।
সাহিনার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক মাস আগে গ্রামেরই এক যুবক তাকে উত্যক্ত করছিল। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। সে সময়ে সাহিনাকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন ওই যুবক। তারপর তিনি চলে যান ভিনরাজ্যে। দিন কয়েক ধরে ওই যুবকের তিন সঙ্গীকে গ্রামে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে। সাহিনার বাবা আবদুস সামাদ বলেন, “মেয়েটা বড় ভাল ছবি আঁকত। পড়াশোনাতেও ভাল ছিল। ভেবেছিলাম, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কিংবা শিল্পী হবে বড় হয়ে।” কান্নায় ভেঙে পড়ে বাবা বলেন, “যদি বুঝতাম আর কখনও ফিরবে না, তা হলে তো বাড়ি থেকে বেরোতেই দিতাম না!”

ছবি: নির্মল বসু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.