এক যুবকের দেহ উদ্ধারের পরে খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শান্তিপুরের ফুলিয়াপাড়া বয়রার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম বিজয় ঘোষ (২৭)। পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। বাড়ির পাশেই একটি মন্দিরের বারান্দায় তিনি রাতে শুতেন। এই দিন সকালে সেখানেই তাঁর রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। মন্দিরের তালা ভাঙা ছিল। একটি সিন্দুকের তালাও ভাঙা হয়েছিল। তবে মন্দির থেকে কোনও কিছুই চুরি যায়নি। ওই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা বৈদ্যবাটীর বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী রমাপতি গোস্বামী বলেন, “নিছক চুরির উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতীরা আসেনি। কারণ, দুষ্কৃতীরা দরজার তালা ভাঙলেও মন্দিরের ভিতর থেকে কিছু চুরি করেনি। আমার ধারণা, দুষ্কৃতীরা খুন করতেই এসেছিল। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে মন্দিরের তালা ভাঙা হয়েছে।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরের মধ্যে গোপালের মাথায় রাখা ছোট সোনার মুকুট বা তামা-পিতলের কোনও বাসন চুরি যায়নি। নদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিন্দম দত্ত চৌধুরী বলেন, “খুনের কারণ এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। তবে মন্দিরের সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনও বিষয় এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” |
এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। শনি ও রবিবার মন্দিরে একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই উপলক্ষ্যে বহু শিষ্যও এসেছিলেন। মঙ্গলবার তাঁরা চলে যাওয়ায় মন্দির চত্বর ফাঁকা হয়ে যায়। শিষ্যেরা জানিয়েছেন, বিগ্রহের যে সব স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে, তা ওই দু’দিন পরানো হলেও তারপরে তা ব্যাঙ্কের লকারে তুলে রাখা হয়। তাই সোনার লোভে দুষ্কৃতীরা হানা দিয়েছিল, সে কথা মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা মনে করছেন না। শিষ্যেরা জানিয়েছেন, রমাপতিবাবুর খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিজয়ও। খুব ছোটবেলা থেকেই মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বিজয়। ওই মন্দিরের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্ক রয়েছে কালনার বলরাম সরকারের। তিনি বলেন, “মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রমাপতিবাবু বিজয়কে খুবই স্নেহ করতেন। তিনি বিজয়কে মন্দিরের সেবাইত করার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বিজয় রাজি ছিল না। বিজয় খুন হওয়ায় আমরা সত্যিই খুব অবাক হয়ে গিয়েছি।” বিজয়ের বাবা সন্তোষ ঘোষ পেশায় রিকশাচালক বলেন, “আমার ছেলের কোনও শত্রু ছিল না। অনেক কষ্টে বড় হয়েছে। মন্দিরেই থাকত। আমরা চাই প্রকৃত খুনি শাস্তি পাক। |