আমন্ত্রণ সত্ত্বেও বাম জমানায় সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে পা বাড়াননি তণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা বদলের পরে তৃণমূলের খাদ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ফতোয়া ছিল, দলের নেতা-কর্মীরা যেন ‘সিপিএম-সংস্রব’ না রাখেন।
তবে, সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলে ক্ষমতাসীন দলের ‘বয়কটের’ রাজনীতির পথে তাঁরা যে হাঁটছেন না বুধবার দুই মন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে থেকে তা আরও একবার জানিয়ে দিলেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার সিপিএম বিধায়ক এসএম সাদি। তিনি বলেন, “আমাদের তো কোনও সমস্যা নেই। যারা ফতোয়া জারি করেছেন সমস্যা তাঁদের। আমন্ত্রণ পেলে সরকারি অনুষ্ঠানে যাব না কেন!”
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সিপিএমের সঙ্গে ‘সামাজিক সংস্রব’ না রাখার তোয়াক্কা না করে দু-দিন আগেই শাসক-বিরোধী ‘সৌহার্দ্যের’ নজির গড়েছিল সাগর। সেখানে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রভঞ্জন মণ্ডলকে মঞ্চে ডেকে জড়িয়ে ধরেছিলেন বঙ্কিকমবাবু। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “জ্যোতিপ্রিয়বাবু যা বলেছেন তা দলীয় নীতি হতে পারে। তবে আমি কিন্তু প্রর্ভী্জনবাবুর সঙ্গে হাতেহাত মিলিয়ে কাজ করব।” দূর্গাপুরেও একটি অনুষ্ঠানে স্থানীয় মেয়র সিপিএমের রথীন রায় ও তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে খোশ গল্প করতে দেখা গিয়েছে।
এ দিনও বেথুয়াডহরিতে নাকাশিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত সরকারি অনুষ্ঠানে সিপিএম বিধায়কের পাশে বসে খোশ গল্প করলেন। কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, স্থানীয় নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খাঁ, পাশের কালীগঞ্জ বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ-সহ নবদ্বীপের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি পুণ্ডরিকাক্ষ সাহা।
রবীন্দ্রনাথবাবু স্পষ্টই বলেন, “এটা সরকারি অনুষ্ঠান। সেখানে সকলেই আসবে। কোথায় কে কি বলছে জানি না। এখানে কোনও বিভেদ করা যাবে না। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে যে এটা মানুষের সরকার। এখানে কোনও বিভাজন চলবে না।” একই কথা নবদ্বীপের বিধায়ক ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি পুণ্ডরিকাক্ষ সাহার, “এটা সরকারি অনুষ্ঠান। কেউ যদি সিপিএম থেকে দূরে থাকার কথা বলেন তাহলে সেটা দলের কথা। খাদ্যমন্ত্রী দলের কথা বলেছেন। মনে রাখতে হবে যে দল আর সরকার এক নয়। সরকার জনগনের।” একই মঞ্চে বসার ব্যাপারে কোনও আপত্তি না থাকলেও সিপিএমের সঙ্গে দূরত্বের প্রশ্নে খাদ্যমন্ত্রীকেই অবশ্য সমর্থন করলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএমের সঙ্গে দূরত্ব রাখার বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা যথার্থই। ওরা যে অত্যাচার করেছে তাকি এত সহজে ভোলা যায়। তার বক্তব্যকে আমি সমর্থন করি। তবে খাদমন্ত্রী কর্মী সম্মেলনে কর্মীদের আবেগের কথা বলেছিলেন। তার সঙ্গে সরকারের কোনও সর্ম্পক নেই। তাঁর কথার ভুল ব্যাখা হচ্ছে।” |