|
|
|
|
বিলম্বে বিচার নিয়ে সংশয় নেতাইয়ের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
নেতাই-কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট নতুন করে চার্জ-গঠনের নির্দেশ দেওয়ায় রীতিমতো হতাশ নিহতদের পরিজনেরা। নেতাইয়ের গুলি-কাণ্ডে নিহত অরূপ পাত্রের বাবা রঞ্জিত পাত্র (তিনিই মামলার মূল অভিযোগকারী) অবশ্য আশাবাদী, “বিচারে দেরি হলেও অভিযুক্তেরা শাস্তি পাবেই।” রঞ্জিতবাবুর স্ত্রী গায়ত্রী পাত্রও বলেন, “এতগুলো নিরীহ মানুষকে গুলি করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দ্রুত হলে ভাল হত। কিন্তু আদালত যখন নির্দেশ দিয়েছে, তখন তো কিছু করার নেই।”
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ের গুলি-কাণ্ডে নিহত আরতি মণ্ডলের মেজোছেলে তরণী মণ্ডল বলেন, “বিচারে বিলম্বের বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না। তবে হতাশ হলেও বিচার-ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। বিচার পাব বলেই এখনও আশা করছি।” নিহত সরস্বতী ঘোড়ইয়ের মেয়ে শ্রাবণীর বিয়ে আগামী ১৯ বৈশাখ (২ মে)। অষ্টাদশী শ্রাবণী এ বার ফের মাধ্যমিক দিয়েছে। বিবাহ-সূত্রে চণ্ডীগড়ে যাবে শ্রাবণী। ‘পাত্র’ কার্তিক সানকি সেখানেই সোনার কারুশিল্পের কাজে যুক্ত। শ্রাবণী বলে, “মায়ের মুখটা মনে পড়লে ভীষণই কষ্ট হয়। ওই ঘটনার কয়েক জন অভিযুক্ত তো এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যাদের জন্য আমরা মাতৃহারা, তাদের সবারই কঠিনতম শাস্তি চাই। আইন-আদালত অত বুঝি না, দ্রুত বিচার পেলে মনের জ্বালা কিছুটা জুড়োত।”
নিহত গীতালি আদকের মেয়ে জনতা আদক বলেন, “উচ্চ আদালতের এই রায়ে কিছুটা হতাশ তো হয়েইছি। এখনও মূল ষড়যন্ত্রী ও অভিযুক্তদের কয়েক জন গ্রেফতার হয়নি। আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়াটা স্বাভাবিক। বিলম্ব হলেও আমরা ন্যায্য বিচারের প্রত্যাশী।” নিহত শ্যামানন্দ ঘোড়ইয়ের ছেলে শান্তনু ঘোড়ই বলেন, “আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলার নেই। আইন আইনের পথে চলুক। তবে আমরা যেন ন্যায্য বিচার পাই।” নিহত সৌরভ ঘোড়ইয়ের স্ত্রী শম্পা ঘোড়ই অবশ্য বলেন, “বিচার পাওয়ার ব্যাপারে এত দিন আশাবাদী ছিলাম। এমন নির্দেশে কিছুটা সংশয় হচ্ছেই।” সৌরভের দাদা শান্তিরঞ্জন ঘোড়ইয়েরও বক্তব্য, “চার্জগঠনের ক্ষেত্রে ‘ভ্রান্তির বিষয়টি’ আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।”
ফের চার্জ-গঠন, তার পর বিচার শুরুর প্রক্রিয়ায় বিলম্ব অবধারিত। আর এই বিলম্বেই বিচার নিয়ে সংশয় বাড়ছে নেতাইয়ের। |
|
|
|
|
|