ঘোষণার কতটা বাস্তবে, দলীয় স্তরে খোঁজ মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যে পরিবর্তনের পরে মাওবাদীদের হাতে নিহতদের পরিজন কেমন রয়েছেন, সে ব্যাপারে আর প্রশাসনিক কর্তাদের রিপোর্টের ভরসায় না থেকে দলীয় স্তরেই খোঁজখবর শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে বুধবারই শালবনির তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব-তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতো গত বছর জঙ্গলমহলে নিহত তিন জনের বাড়ি যান। নিহতদের নিকটজনেরা কেমন রয়েছেন, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন বিধায়ক। শ্রীকান্ত বলেন, “ওই পরিবারগুলির মানুষজন কেমন রয়েছেন, তা জানতেই ওঁদের বাড়ি গিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীকে পরিবারগুলির কথা জানাব।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার লালগড়ের সভা-মঞ্চে নেতাইয়ের জনতা আদককে ডেকে কথা বলার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পারেন, ঘোষণা ও বাস্তবে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে মমতা জেনেছিলেন, নেতাইয়ে পাকা রাস্তার যে প্রতিশ্রুতি তিনি গত অক্টোবরেই দিয়েছিলেন, তা পূরণ হয়েছে। কিন্তু জনতা তাঁকে জানান, রাস্তা হয়নি। তখন জেলাশাসককে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। জানতে পারেন, রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। তেমনই, মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছিলেন, নেতাইয়ে নিহত গীতালি আদকের মেয়ে জনতার চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু জনতাই তাঁকে জানান, চাকরি নয়, পুলিশের ব্যবস্থাপনায় কম্পিউটর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি। মাসে মাসে হাজার চারেক টাকা করে অবশ্য স্টাইপেন্ড পাচ্ছেন।
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সংশয়ে পড়ে যান, জঙ্গলমহলে নিহতদের আত্মীয়স্বজনের চাকরির প্রতিশ্রুতি যা তিনি নিজেই দিয়েছিলেন আগের কয়েক দফার সফরে, তাঁদের প্রত্যেকের চাকরি সত্যি হয়েছে তো? এই সংশয় থেকেই দলীয়স্তরে খোঁজখবরের নির্দেশ। লালগড়ের সভার পরের দিনই তাই শালবনির বিধায়ক পৌঁছে যান বাবু বসু, লালমোহন মাহাতো, রবীন্দ্রনাথ মিশ্রদের বাড়ি। বাবু বসু ছিলেন ঝাড়খণ্ডী একটি দলের নেতা। অন্য দু’জন তৃণমূলেরই নেতা-কর্মী। গত বছর রাজ্যে পরিবর্তনের পর নিহত হয়েছিলেন এই তিন জন। গত অক্টোবরে জঙ্গলমহলে এসে ওই তিন জনের পরিজনেদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
গত বছর ২৪ অগস্ট ঝাড়গ্রামের ধাংড়িতে খুন হন তৃণমূল-কর্মী রবীন্দ্রনাথ মিশ্র। ২০ সেপ্টেম্বর খুন হয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের সাপধরা অঞ্চলের তৃণমূল নেতা লালমোহন মাহাতো। ২৫ সেপ্টেম্বর বিনপুরের দহিজুড়িতে খুন হন বাবু বসু। শ্রীকান্তবাবু এ দিন জেনেছেন, নিহত বাবু বসু-র মেয়ে অনিন্দিতা আঁধারিয়া রাজবল্লভ উচ্চবিদ্যালয়ে পার্শ্বশিক্ষিকার অস্থায়ী চাকরি পেয়েছেন। লালমোহনবাবুর স্ত্রী ছবিরানিদেবীও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে অস্থায়ী কাজই করছেন। আর রবীন্দ্রনাথবাবুর দুই মেয়ে (তাদের মা-ও নেই) স্কুল-পড়ুয়া। রবীন্দ্রনাথবাবুর বৃদ্ধ বাবা-মা’র বার্ধক্যভাতাটুকুরও ব্যবস্থা হয়নি এখনও। স্থায়ী চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ যে হয়নি, বাবুবাবু বা লালমোহনবাবুর পরিজনেরা সে কথা মনে করিয়ে দেন বিধায়ককে। তাঁদের পরিবারের কারও স্থায়ী চাকরির ব্যাপারে এ বার কি রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ করবে? শালবনির বিধায়ক বলেন, “নিশ্চয়ই করবে। মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানাব।” রবীন্দ্রনাথবাবুর বৃদ্ধ বাবা-মা’র নাম বার্ধক্যভাতার তালিকায় যাতে অন্তর্ভুক্ত হয়, সে ব্যবস্থাও করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শ্রীকান্তবাবু।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.