সপ্তাহখানেকের মুক্ত জীবন কাটানোর পর দিন কয়েক আগে ধরা পড়েছে ‘অনুপ্রবেশকারী’। আখাউড়া সীমান্ত পেরিয়ে ভারতভূমিতে ঢুকে পড়া হস্তিনির হালের ঠিকানা এখন ত্রিপুরার সিপাহিজলার ‘অভয়ারণ্য’। বনরক্ষীদের কড়া পাহারায় দিন কাটছে গর্ভিণী হস্তিনির। চলছে চিকিৎসাও।
দিন দশেক আগে পালিয়ে আসা এই হস্তিনি ত্রিপুরার বনকর্মীদের মাইলের পর মাইল দৌড় করিয়েছে। কখনও কিল্লার , কখনও মহারানি জঙ্গলে। দক্ষিণের বিভিন্ন জঙ্গলে তার সন্ধানে সপ্তাহ ভর চরকি খেয়েছেন বনকর্মীরা। শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে দক্ষিণে করবুকের চেলাগাং এলাকার বাঁশবাগানে। ‘বিশেষ অতিথি’ যাতে আবার পালিয়ে না যায় সে জন্য ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাকে কব্জা করতে হয়। ‘বন্দি’ করে তাকে প্রথমে নিয়ে আসা হয় অমরপুরের থাকছাড়ায়। পরে গোমতী জেলার বন দফতরের আস্তানায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম। তারপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিপাহিজলার অভয়ারণ্যে। সিপাহিজলার চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অজিত ভৌমিক জানান, ‘‘সেখানে বন দফতরের কর্মীদের কড়া পাহাড়ায় হাতিটি এখন ভালই আছে। সঙ্গে রয়েছেন চিড়িয়াখানার একজন প্রশিক্ষিত মাহুতও।’’
গত সপ্তাহের মাঝামাঝি কিল্লার জঙ্গলে হাতিটিকে একবার ধরার সুযোগ মিলেছিল। কিন্তু হাতিটি তখন ফাঁদ কেটে বেরিয়ে গা ঢাকা দেয় কিল্লার গভীর জঙ্গলে। দু’-তিন দিন তার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহের শেষে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বনকর্মীরা অমরপুর সংলগ্ন উত্তর চেলাগাং অঞ্চলে প্রথমে যান।পায়ের টাটকা ছাপ দেখে তাঁরা বোঝেন, হাতিটি কাছেপিঠেই ঘোরাফেরা করছে। বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করা হয় তাকে। তারপর ‘গ্রেফতার’।
বন দফতরের এক কর্মী বললেন, হাতিটি যে পোষা তার প্রমাণ তার পায়ের ছিন্ন শিকল। তার পায়ের ক্ষতের চিকিৎসাও চলছে এখন। হস্তিনিটি বাংলাদেশের কোনও সার্কাস দলের এমন শোনা গেলেও এখনও কেউ তার মালিকানার ‘দাবি’ পেশ করেনি রাজ্য বন দফতরের কাছে। ‘দাবি’ আইনত প্রতিষ্ঠিত হলে তবেই ‘অনুপ্রবেশকারী’র পুরনো ডেরায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা। অন্যথায় ত্রিপুরার অভয়ারণ্যই তার ‘স্থায়ী’ ঠিকানা হয়ে উঠবে। |