একটা রদবদলের সম্ভাবনা, আর তাতেই আশঙ্কায় সরকারের একাধিক মন্ত্রী।
মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে সংগঠনের কাজ করতে চেয়ে জনা চারেক মন্ত্রীর দলীয় সভানেত্রীকে দেওয়া চিঠির দৌলতে এখন কংগ্রেসের অন্দরমহলে তুমুল শোরগোল। গাঁধী পরিবারের আস্থাভাজন ওই মন্ত্রীদের পাশাপাশি দলের অনেকেই অবশ্য প্রকাশ্যে চিঠির বিষয়টি অস্বীকার করছেন। কিন্তু তাতে সমস্যা কাটছে না। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “আসলে এটাই কংগ্রেসের দস্তুর। কেন না মন্ত্রিসভার দায়িত্ব ছেড়ে সংগঠনের জন্য কাজ করার কথা প্রকাশ্যে সব মন্ত্রী বললেও ‘সুখের চাকরি’ ক’জনই বা ছাড়তে চায়? তা ছাড়া সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের এখন যা অবস্থা, তাতে দলের অনেকেরই আশঙ্কা, যে পরবর্তী লোকসভা ভোটের পর কংগ্রেস ক্ষমতায় না-ও ফিরতে পারে। তখন সবাইকে সংগঠনের কাজই করতে হবে। ফলে মন্ত্রিত্বের সুযোগ যতক্ষণ রয়েছে, তা ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী সকলে নন।” রদবদলের এমন সম্ভাবনা ভেস্তে দিতেও সক্রিয় হয়েছেন দলের একটা অংশ।
এই অবস্থায় দলের অন্দরমহলে একাংশের সমালোচনার মুখেও পড়েছেন পদত্যাগে ‘ইচ্ছুক’ জয়রাম রমেশ, সলমন খুরশিদরা। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, ইস্তফার ‘ইচ্ছা প্রকাশে’র ঘটনা একেবারেই মনগড়া।
তবে দশ জনপথ সূত্রে বলা হচ্ছে, আসলে একই সঙ্গে সংগঠন ও সরকারের রদবদল চাইছেন সনিয়া। ফলে মন্ত্রিসভা থেকে কিছু ‘অদক্ষ’ নেতাকে সরানোর ভাবনা রয়েছে। তেমনই দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও কিছু নেতাকে সরানোর কথা ভাবা হয়েছে। সেই জায়গায় নতুন প্রজন্মের কিছু নেতাকে আনতে পারেন সনিয়া। তিনি এমন রদবদল চান, যা ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে সরকারের ভাবমূর্তি ফেরাতে সাহায্য করে। এমনকী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ বার দশ জনপথের আস্থাভাজনরা মন্ত্রিসভার শীর্ষ চারটি মন্ত্রকেও রদবদলের দাবি তুলতে শুরু করেছেন।
তবে শেষ প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। কংগ্রেসে এমন রদবদলের সম্ভাবনা এই প্রথম নয়। অতীতে অনেক বার সেই সম্ভাবনা দেখা দিলেও দলের মধ্যে যাঁরা স্থিতিশীলতার পক্ষে, তাঁরা কোনও না কোনও ভাবে তা গুলিয়ে দিতে চেয়েছেন। এ বারও শুরু হয়ে গিয়েছে সেই চেষ্টা। ফলে আখেরে রদবদল হয় কি না, এবং তার মাত্রাই বা কী হয়, এখন সেটাই দেখার। |