তৈরি হচ্ছে বিশেষ গোষ্ঠী
দারিদ্র নিয়ে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
যোজনা কমিশনের দাবির জেরে প্রশ্নের মুখে পড়ে এ বার দারিদ্রের সংজ্ঞা নিয়েই নতুন করে ভাবতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। দারিদ্রসীমা নির্ধারণ ও দরিদ্র চিহ্নিত করার পদ্ধতি পুনর্বিবেচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীও গড়তে চলেছে সরকার। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই।
বিতর্কের মূলে যোজনা কমিশনের দু’টি দাবি। প্রথমটি হল, দেশে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে কমে গিয়েছে। এ বার তাদের নতুন দাবি, ২০২০-র পরে দেশে এক জন দরিদ্রও থাকবে না। মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ার এই ‘অনুমান’ নিয়ে গত কালই বিস্ময় প্রকাশ করেছিল অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। যোজনা কমিশনের হিসেবে দারিদ্রের সংজ্ঞাটা কী, সংসদে আজ এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মনমোহন সরকারকে। প্রবল বিরোধিতার মুখে সরকারের তরফে জানানো হয়, দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে দেওয়া হবে। তারাই বিষয়টি দেখবে।
যোজনা কমিশনের নতুন হিসেব অনুযায়ী, শহরাঞ্চলে এক জনের দৈনিক আয় ২৮ টাকা ৬৫ পয়সা বা তার কম হলে তাঁকে দরিদ্র ধরা হবে। আর গ্রামের ক্ষেত্রে অঙ্কটা হল ২২ টাকা ৪০ পয়সা। সেই হিসেবে ২০০৪-০৫ অর্থ বর্ষে ৪০ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে ছিলেন। যা মোট জনসংখ্যার ৩৭.২%। ২০০৯-১০ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি ৫০ লক্ষে। যা জনসংখ্যার ২৯.৮%। অর্থাৎ শুধু অনুপাত নয়, দেশে দরিদ্রের সংখ্যাও কমেছে। কিন্তু যোজনা কমিশনের বলা ওই ন্যূনতম দৈনিক আয়ে আজকের দিনে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসার মতো অত্যাবশ্যক প্রয়োজন মেটানো আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী দলগুলি। বিজেপি ও সিপিএম অভিযোগ তোলে, গরিবের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতেই কেন্দ্র দারিদ্রের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছে। কারণ, বহু সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা শুধু দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদেরই দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে যোজনা কমিশন দাবি করেছে, ২০২০ সালের শেষে ভারত দারিদ্রমুক্ত দেশ হবে। খুব বেশি হলে ২০২২ সালে, ত্রয়োদশ পঞ্চবার্ষিকী যোজনাকালের শেষে ঘটতে চলেছে সেই ঘটনা। লাকড়াওয়ালা কমিটির হিসেব অনুযায়ী এই লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যোজনা কমিশনের এই দাবিতে বিস্মিত সংসদীয় কমিটি। আজ লোকসভায় সমাজবাদী পার্টির নেতা শৈলেন্দ্র কুমার অভিযোগ তোলেন, সরকার মিথ্যে দাবি করছে। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষের ঠিক হিসেব জানার জন্য একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি তৈরিরও দাবি তোলেন তিনি। শিবসেনার অনন্ত গীতে আবার বর্তমান পদ্ধতিটাই ত্রুটিপূর্ণ বলে সরকারের সমালোচনা করেছেন। পরিকল্পনা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার বলেন, “আমরা মিথ্যা দাবি করছি, এটা বলা ভুল। পরিসংখ্যান মিথ্যে বলে না। সুপ্রিম কোর্টকেও একই পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে।”
আগে দারিদ্রের মাপকাঠি হিসেবে তেন্ডুলকর কমিটির সুপারিশ কোর্টের সামনে পেশ করেছিল কেন্দ্র। তখন শহর ও গ্রামের ক্ষেত্রে ওই দৈনিক আয়ের অঙ্ক দেখানো হয়েছিল যথাক্রমে ৩২ ও ২৬ টাকা। অর্থাৎ এখনকার তুলনায় সামান্য বেশি। তাতেই ন্যূনতম জীবনধারণের জন্য ওই অঙ্ক যথেষ্ট নয় বলে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করেছিল শীর্ষ আদালত। অশ্বিনী কুমার বলেন, “দারিদ্রের নতুন সংজ্ঞা তৈরি ও দরিদ্রদের চিহ্নিত করার পদ্ধতি পুনবির্বেচনা করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দরিদ্ররা যাতে বিভিন্ন রকম সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পান, তার জন্য চাহিদার সব রকম সংস্থান ও দারিদ্রের সূচক খতিয়ে দেখবে এই গোষ্ঠী।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.