|
|
|
|
|
নিয়ম ‘অসাংবিধানিক’ |
বেশি নম্বর সত্ত্বেও ছাত্র বাদ,
ভর্তি-তালিকা কোর্টে স্থগিত
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। অথচ মেধা-ভিত্তিক তালিকা প্রকাশ না-করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিএড পাঠ্যক্রমে ভর্তি করতে ছাত্রছাত্রীদের তালিকা টাঙিয়েছে তাদের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী। এতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে মামলা হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই তালিকাই স্থগিত করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তির পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেলেও সেই প্রার্থী যে ভর্তির সুযোগ পাবেনই, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ বিএডের ৯৫ শতাংশ আসনে একমাত্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত কলেজ থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাশ করা প্রার্থীদেরই ভর্তি নেওয়া হবে। বাকি মাত্র পাঁচ শতাংশ আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা প্রার্থীরা। এই নিয়মের ফলে ভর্তি-পরীক্ষায় বাইরের কোনও প্রার্থী যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের প্রার্থীর থেকে বেশি নম্বরও পান, তা হলে তিনি তালিকায় স্থান পাবেন না। কারণ তিনি অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন! এই নিয়ম ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক’ বলে মন্তব্য করে বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষিত তালিকা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। ফলে আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই তালিকা অনুযায়ী কোনও প্রার্থীকে বিএডে ভর্তি করা যাবে না।
ভর্তি-পরীক্ষা সত্ত্বেও চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই ‘বৈষম্য’-এর কথা জানিয়ে মিন্টু সরকার নামে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্নাতক হাইকোর্টে মামলা করেন। আবেদনকারীর আইনজীবী অর্জুন রায় মুখোপাধ্যায় বলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, নির্বাচিতদের মধ্যে সব থেকে বেশি যিনি পেয়েছেন, তাঁর নম্বর ৫৩.৬ শতাংশ। অথচ আবেদনকারীর নম্বর ৬১.৫ শতাংশ। বেশি নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও মিন্টু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও বিএড কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না। কারণ তিনি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, যদি মেধার মূল্য না-দিয়ে এ ভাবে ভর্তি করা হয়, তা হলে বৃহত্তর ও সুদূরপ্রসারী সমস্যা দেখা দেবে। ধরেই নেওয়া যায় যে, বিএড পাশ করার পরে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই শিক্ষকতা করবেন। সে-ক্ষেত্রে ভাল ছাত্রছাত্রীরা যদি শিক্ষকতায় আসার সুযোগ না-পান, তা হলে তাঁদের ব্যক্তিগত ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে আগামী দিনের পড়ুয়ারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও তাদের নিয়মের কথা হাইকোর্টকে জানানো হয়। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালত জানায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নিয়ম সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে মেধাই একমাত্র বিবেচ্য। সে-ক্ষেত্রে আর কোনও ভাবেই ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করা যায় না। অথচ এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভর্তির জন্য পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু ভর্তির জন্য নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীর তালিকা টাঙানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে। বিচারপতি নির্দেশ দেন, এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়কে দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে। এবং এই মামলার ফয়সালা না-হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত প্রার্থী-তালিকা স্থগিত থাকবে। |
|
|
|
|
|