ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মৈত্রীর চাকা গড়াতে ভরসা রেল মন্ত্রক-ও।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তানের জন্য প্রায় শ’খানেক রেল ইঞ্জিন চান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মনমোহনও। সেই সূত্র ধরেই আগামী কাল ভারতীয় রেলের অধীনস্থ সংস্থা ‘রাইটস’-র সঙ্গে প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে বসতে চলছেন পাকিস্তান রেলওয়ে অ্যাডভাইসরি অ্যান্ড কনসালটেন্সি সার্ভিস (পিআরএসিএস)-র প্রতিনিধিরা।
রেল ও বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, পাকিস্তানের ওই দলটি প্রায় ১০০টি ডিজেল ইঞ্জিনের জন্য সওয়াল করতে চলেছে। সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারতীয় ইঞ্জিনিয়াররা যাতে নিয়মিত ভাবে পাকিস্তানে যান, এবং ভবিষ্যতে ওই ইঞ্জিনগুলির নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রযুক্তি দেওয়ার অনুরোধও করা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। গত বছর পাকিস্তান পঞ্চাশটি ইঞ্জিন চেয়েছিল। তা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে সে সময়ে জানায় ভারত। সূত্রের খবর, গত মার্চ মাসে পাকিস্তানের ৫২০টি ইঞ্জিনের মধ্যে মাত্র ৭৬টি চালু ছিল। ফলে ফি দিন অসংখ্য ট্রেন বাতিল করতে হচ্ছে পাকিস্তান রেলকে। ভারত যদি বিক্রি করতে রাজি না হয়, সাময়িক ভাবে ইঞ্জিন ভাড়া নেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারে পাকিস্তান।
তবে এই মুহূর্তে ঠিক ক’টি ইঞ্জিন পাকিস্তানকে দেওয়া সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারত প্রায় ডজন খানেক ইঞ্জিন দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশকে। সেগুলি দেওয়ার পরেই শিকে ছিঁড়বে পাকিস্তানের। তা ছাড়া বর্তমানে ভারতে ফি বছর প্রায় ৭০০ নতুন ইঞ্জিনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রক জানিয়েছে, তার মধ্যে গত বছরে ৫৮২টি ইঞ্জিন উৎপাদিত হয়। যার মধ্যে ডিজেল ইঞ্জিন ২৮৪টি। ফলে এ দেশেই ইঞ্জিনের ঘাটতি রয়েছে। দেশের চাহিদা না মিটিয়ে পাকিস্তানকে সাহায্য করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রেল মন্ত্রকের অনেক কর্তাই। প্রতিবেশী দেশকে দেশীয় প্রযুক্তি দেওয়ার বিষয়েও আপত্তি রয়েছে মন্ত্রকের একাংশের। যদিও বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের যে বাতাবরণ গড়ে উঠছে, তা নষ্ট না করে রেল মন্ত্রকের উচিত পাকিস্তানকে সাহায্য করা। |