মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। একের পর এক ভারতীয় ‘স্তম্ভের’ নাম উঠে আসছে তাঁর মুখে। সচিন তেণ্ডুলকর থেকে রতন টাটা, কে নেই সেই তালিকায়। আর দর্শকাসনে বসে থাকা হাজার দেড়েকে ভারতীয়ের হাততালিতে ফেটে পড়ছে সভাঘর। গত কাল মধ্য লন্ডনের লরেন্স হলে ‘কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অফ ইন্ডিয়া’-র উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের ছবিটা ছিল এই রকমই।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভারতীয়দের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণও ছিল যথেষ্ট। ক্রিকেট থেকে ব্রিটেনের রাজনীতি, সবেতেই যে উঠে আসছে ভারতীয়দের নাম। তাঁদের অবদানের কথা।
একটা সময় তো উল্লাসে ফেটে পড়ল গোটা হল। যখন গর্বের সঙ্গে ক্যামেরন বললেন, “সচিনের অটোগ্রাফ দেওয়া ব্যাটটাই আমার জীবনে সেরা সংগ্রহ।” বলে চললেন ক্যামেরন, “চেকারসে থাকাকালীন এক দিন দেখি মেয়ে ওই ব্যাট নিয়ে ক্রিকেট খেলছে। ছুটে গিয়ে ওর হাত থেকে ব্যাটটা কেড়ে নিয়েছিলাম। বলেছিলাম, এটা নিয়ে খেলো না। আমার সবচেয়ে দামি সংগ্রহ এটা।” |
এ রকমই একের পর এক কৃতী ভারতীয়ের কথা এ দিন ফুটে ওঠে ক্যামেরনের মুখে। তাঁর কথায়, “অনেকেই মনে করেন কল সেন্টারের উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় অর্থনীতির ভিত। কিন্তু সত্যিটা হল ব্রিটেনে প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিয়েছে ভারতীয় ব্যবসা।” ব্রিটিশ সংস্থা জাগুয়ার, রড লেভার এখন টাটাদের। ভারতীয় টাকা এবং ব্রিটিশ পরিশ্রমে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের গাড়ি। এই প্রসঙ্গও ছুঁয়ে গেলেন ক্যামেরন। দর্শকাসনে বসে তখন মিটিমিটি হাসছেন ব্রিটেনে টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম কর্তা আনওয়ার হুসেন।
এ দিন লরেন্স হলে হাজির ভারতীয়দের অধিকাংশই এক সময় উগান্ডা থেকে বিতাড়িত হয়ে ব্রিটেনে চলে আসেন। ক্যামেরন বলেন, “ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত ও পূর্ব আফ্রিকা থেকে আসা ভারতীয়রাই ব্রিটেনকে সমৃদ্ধ করেছে।” এমন স্বীকৃতিতে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত তাঁরা। এই ‘মিলিবে মিলাবে’র সুর বাজল অনুষ্ঠানের আয়োজক লর্ড ডলার পোপটের গলাতেও। বললেন, “আমরা এখন আর শুধু অভিবাসী নই।”
ক্যামেরনের কথায় এ দিন কিন্তু আরও বড় ইঙ্গিত ছিল। তাঁর কথায়, “আমাদের দলই দেশকে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী (মার্গারেট থ্যাচার) দিয়েছে। আমাদের দল থেকেই প্রথম কোনও ইহুদি প্রধানমন্ত্রী (বেঞ্জামিন দিজরায়েলি) হয়েছেন। সামনের দিকে তাকালে মনে হয়, খুব সম্ভবত আমাদের দল থেকেই প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীও পাবে ব্রিটেন।” |