ধুলোর ঝড় আসানসোলে, বৃষ্টির মুখ দেখল দুর্গাপুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল ও দুর্গাপুর |
সকাল হতে না হতে চড়া রোদ আর গরম হাওয়ার দাপট। এক-আধ বার এক মেঘের দেখা মিললেও দেখা নেই বৃষ্টির। সব মিলিয়ে তীব্র দাবদাহে জেরবার শিল্পাঞ্চল। সোমবার বিকেলে আসানসোলে ধুলোর ঝড়ে শহর ঢাকলেও বৃষ্টি তেমন হয়নি। তবে বৃষ্টির দেখা মেলায় তাপমাত্রার পারদ সামান্য হলেও নেমেছে দুর্গাপুরে।
মরশুমের শুরুতে বেশ কয়েক দিন পর পর কালবৈশাখীতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল শিল্পাঞ্চল। কিন্তু মাসখানেক ধরে তারও আর দেখা নেই। সকাল হতে না হতেই প্রখর রোদের ঝলকানি। ‘লু’-এর হাত থেকে বাঁচতে সকাল সকাল বাইরের কাজ সেরে ঘরে ঢুকে পড়ছেন শহরবাসী। ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন। যাঁদের বেলায় বেড়োতেই হচ্ছে, সর্বাঙ্গ ঢেকে কোনও মতে বাইরের কাজ সারছেন তাঁরা। |
|
বুধবার বিকেলে আসানসোলের কল্যাণপুরে ছবিটি তুলেছেন শৈলেন সরকার। |
প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে আমপোড়া সরবত ও টক দইয়ের লস্যির বিক্রি এ বার বেশ ভালই হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। নামিদামি ব্র্যান্ডের ঠান্ডা পানীয়ের চেয়ে পুদিনা পাতার রস মিশ্রিত আমপোড়া সরবত ও লস্যিই না কি বেশি পছন্দ তৃষ্ণার্তদের। আখের রসের চাহিদাও ভালই। তবে অত্যধিক গরমে আখ থেকে রস বের করা খরচে পোষায় না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। গরমে জলবাহিত রোগের হাত থেকে বাঁচতে ওআরএস-এর প্যাকেট সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে সরকারি হাসপাতালগুলি। আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের সুপার নিখিল দাস জানান, জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রচুর পরিমাণে ওআরএস-এর প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। শহরবাসীর প্রয়োজন মেটাতে সে গুলি চাহিদা মতো দেওয়া হচ্ছে। |
|
ছবি: বিশ্বনাথ মশান। |
গরমে রাস্তার খোলা খাবার, রঙ মিশ্রিত পানীয় ও রাস্তার কাটা ফল না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আসানসোল মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর। আধিকারিক অরিতা সেন চট্টরাজ জানান, এই সময় খাওয়া-দাওয়ায় সামান্য অনিয়ম হলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যতটা সম্ভব বাইরের খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল। যদিও আসানসোল ও দুর্গাপুরের একাধিক রাস্তার পাশে রঙ মিশ্রিত পানীয় ও কাটা ফল বিক্রি হচ্ছে দেদার।
শিল্পাঞ্চল জুড়ে শুরু হয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। খনি অধ্যুষিত অঞ্চলে তা কয়েক গুণ বেশি। নদী-পুকুরও শুকিয়ে কাঠ। কুয়োর জলস্তর অনেক নীচে নেমেছে। ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে যাওয়ায় গভীর নলকূপেও জল উঠছে না। নদীর জল কমে যাওয়ায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সরবরাহেও ভাঁটা পড়েছে। যদিও নির্জলা এলাকাগুলিতে ট্যাঙ্কে করে জল দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত। দুর্গাপুর পুরসভা এলাকায় জলসঙ্কট আসানসোলের তুলনায় কম। পুরসভার পক্ষ থেকে এলাকাগুলিতে সারাদিনে বেশ কয়েক দফায় জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। যদিও বস্তি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে জল পাঠানো হচ্ছে তা পরিমাণে যথেষ্ট নয়। এই অবস্থায় শিল্পাঞ্চলবাসীর তৃষ্ণা মেটাতে পারে এক পশলা ঝড়-বৃষ্টি। তবে গরমের দাবদাহ থেকে স্বস্তি মিলবে কবে, পরিবেশ দফতরের ঘোষণার অপেক্ষায় শিল্পাঞ্চল। |
|