বহু বার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দলঞ্চা নদীর উপর সেতু তৈরি না-হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। ইসলামপুর শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূর দিয়ে গিয়েছে দলঞ্চা নদী। নদীর ওপারে রয়েছে ৬০টির বেশি গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দাদের ইসলামপুরে যাতায়াতে ভরসা বাঁশের সাঁকো। সারা বছর বাসিন্দারা সাঁকোয় পারাপার করলেও বর্ষার তিনমাস ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হয়। বাঁশের সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রতি বছর দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যার কথা বিভিন্ন মহলে জানানো হলেও পাকা সেতু করা হচ্ছে না। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মহম্মদ ইজরাইল। তিনি বলেন, “ওই এলাকার বাসিন্দারা সত্যিই সমস্যায় রয়েছেন। পাকা সেতু তৈরির ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” দলঞ্চা নদীর উপর সেতু তৈরি না-হওয়ায় এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীর উপরে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় এক বাসিন্দা সত্যজিত সিংহ বলেন, “ইসলামপুরের বিধায়ক এলাকার ৯ বারের বিধায়ক। প্রতি বারই নির্বাচনের সময়ে তিনি সেতু তৈরির আশ্বাস দেন। আমরাও ভোট দিই। আজ পর্যন্ত সেতু তৈরির ব্যাপারে তাঁর উদ্যোগের ব্যাপারে কিছুই জানি না।” সেতুর প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, “ওই এলাকায় সেতু নেই জানি। এর আগে আমি একটি এলাকায় কাঠের সেতু করার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। সেতুগুলির একটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে ব্লক প্রশাসনের কাছে। বিষয়টি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরেও পাঠানো হয়েছে। বাসিন্দারা স্মারকলিপি দিয়ে ক্লান্ত। আমিও জানি না কবে দুর্দশা ঘুচবে।” ইসলামপুর মহকুমার জগতাগাঁও, বোচাভিটা, গনকটোলা, বীজবাড়ি, কামারভিটা প্রভৃতি গ্রাম নদীর ওপারে রয়েছে। ওই গ্রামগুলির হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশুনার কাজে প্রতিদিন ইসলামপুর শহরে যায়। তারাও ওই একই সমস্যার মুখে পড়ে। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই এলাকার জন্য মোট ৩ টি সেতু এখনই দরকার। প্রতিবারই নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এলাকার ওই সেতুর জন্য মাপজোঁকও হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দাড়িভিটা সংলগ্ন বীজবাড়ি, সাতভিটা-সহ এমন কিছু গ্রাম রয়েছে যারা নদী না-পেরিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন না। বর্ষার সময় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে নদী পার হওয়ার উপায় থাকে না। দমকল পৌঁছতে হলে এতটাই ঘুরপথে যেতে হয় যে তার আগেই আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।” |