উৎপাদন কম হওয়ায় হলদিবাড়ির চাষিদের আশা ছিল এ বার অন্তত টম্যাটোর ভাল দাম মিলবে। খরচের টাকা তুলে আনতে সমস্যা হবে না। কিন্তু বাজারে পৌছে মাথায় হাত পড়ছে। ভাল দামের জন্য ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। চাষিদের অভিযোগ, বাজার ভাল হওয়া সত্ত্বেও কতটা কম দামে সবজি কেনা যায় যেন সেই প্রতিযোগিতা চলছে। নানা অছিলায় তাঁদের ঠকানো হচ্ছে। প্রতিবাদ জানিয়ে লাভ হচ্ছে না। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রগতিশীল কৃষক সংগ্রাম সমিতি আন্দোলনে নেমেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বুধবার হলদিবাড়ি ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের স্মারকলিপি দেওয়া হয়। কৃষক সংগ্রাম সমিতির সম্পাদক মানিক বর্মন বলেন, “এ বার টম্যাটোর বাজার ভাল। কিন্তু চাষিরা দাম পাচ্ছে না। পাইকারি সবজি ব্যাবসায়ীরা চাষিদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত করছে।” |
যদিও কৃষক সংগঠনের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে হলদিবাড়ি পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের সভাপতি তরুণ দত্ত বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। চাষিরা ভাল দাম পাচ্ছেন।” পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, টম্যাটোর ফলন এ বার অনেক। অন্য বছর এই সময় গড়ে ৩০০ কুইন্টাল টম্যাটো পাইকারি বাজারে আমদানি হত। এ বার ৯০ কুইন্টালও আসছে না। তাই দাম কম দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। বরং সবজি নিয়ে চাষি বাজারে পৌছনো মাত্র ক্রেতারা হামলে পড়ছে। কম দাম দেওয়া হলে চাষিরা বিক্রি করবেন কেন সেই প্রশ্নও তাঁরা তুলেছেন। সংগঠনের সভাপতি পাল্টা অভিযোগ করেন, ভুল বার্তা পৌছে দিতে ওই সমস্ত কথা বলা হচ্ছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিবাড়ি ব্লকে টম্যাটোর উৎপাদন অন্য বছরের তুলনায় এ বার অনেক কম। এই সময় ট্রাক বোঝাই করে হলদিবাড়ির টম্যাটো দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশে যায়। এ বারও যাচ্ছে কিন্তু পরিমাণে অনেক কম। কারণ শুধু কম আমদানি নয়। স্থানীয় বাজারেও টম্যাটোর দাম ভাল। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহারের খুচরো বাজারে ২০ টাকা কিলোগ্রাম দামে বিক্রি হচ্ছে। হলদিবাড়ির পাইকারি সবজি বাজারে এ বার দাম উঠেছে ১৫ টাকা কিলোগ্রাম। অন্য বছর এই সময় দাম এতটাই কম থাকে যে রাস্তায় সবজি ফেলে চলে যেতে হয়। কৃষক সংগ্রাম সমিতির অভিযোগ, বাজার ভাল হলেও চাষিদের মুখে হাসি নেই। কারণ, টিক মতো দাম মিলছে না। টম্যাটোর মান খারাপ আজুহাত দেখিয়ে প্রতি কিলোগ্রামে ২ টাকা কম দাম দেওয়া হচ্ছে। বিডিও দিব্যেন্দু মজুমদার বলেন, “চাষিদের অভিযোগ দেখা হবে।” |