টাকার অভাবে প্রায় পাঁচ হাজার ইন্দিরা আবাসের ঘর অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বর্ষার আগে ওই প্রকল্পের দ্বিতীয় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না এলে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে আরএসপি। কালচিনি ব্লকের বিডিও থেন্ডুপ শেরপা সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নয়, টাকা না থাকায় কালচিনি ব্লকে প্রায় পাঁচ হাজার ইন্দিরা আবাসের কাজ থমকে রয়েছে।”
তিনি জানান, ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে ৪৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ হয়। প্রথম কিস্তিতে উপভোক্তাদের ২২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। পরে বাড়ি তৈরির জন্য বাকি টাকা দেওয়া হয়। এই বছর কালচিনি ব্লকে প্রায় ৫ হাজার ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে ঘর তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। সেই মতো উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা গত বছর ডিসেম্বর মাসে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না আসায় কাজ হচ্ছে না। রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফ্রান্সিস টোপ্পো জানান, তাঁর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বক্সা পাহাড় থেকে শুরু করে রাজাভাত খাওয়া পর্যন্ত। কালচিনি ব্লক অফিসে ১৮০টি ইন্দিরা আবাস মঞ্জুরের জন্য পাঠানো হয়। ব্লক অফিসে ১৪০-১৫০ ইন্দিরা আবাস মঞ্জুর করে ডিসেম্বর মাসে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। প্রায় সব উপভোক্তার প্রথম কিস্তির টাকায় বাড়ি তৈরীর অর্ধেক কাজ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “টাকা না থাকায় বাকি কাজ শুরু করতে পারছি না।” রাজাভাতখাওয়া এলাকার পঞ্চায়েত রনজিৎ দাস জানান, প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে উপভোক্তারা ঘর তৈরির কাজ কতটা করলেন তা সমীক্ষা করতে হয়। সেটা হলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। তাহলে বাকি টাকা পাওয়া যায়। তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে ইন্দিরা আবাসের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা নেই। ফলে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষার কাজ শুরু করতে পারছি না। কেননা সমীক্ষা হলেই উপভোক্তারা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দাবি করবেন।” রাজাভাতখাওয়া এলাকার মার্চেন্ট পাড়া, ডিপো লাইন, পাম্পু বস্তি-সহ বির্স্তীণ এলাকায় যারা ইন্দিরা আবাস পেয়েছেন তাদের প্রত্যেকের বাড়ির অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কেউ বা টিনের চাল লাগিয়েছেন। বাড়ির একাংশে টিনের বেড়া দিতে পারেননি। কেউ বা কেবল পাকা ভিত তুলে বসে রয়েছেন। মার্চেন্ট পাড়ার বাসিন্দা কুসুম রাই ও চন্দ্রকলা রাই বলেন, “হাতির হানা হানায় তাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ইন্দিরা আবাসের জন্য গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্রথম কিস্তির টাকা আসার পরে বাড়ি বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। তারপর থেকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কবে আসবে বুঝতে পারছি না। সামনে বর্ষাকাল আসছে। তাড়াতাড়ি বাড়ির কাজ শেষ না-হলে কী করব ভাবতে পারছি না।” কালচিনি ব্লকের আরএসপির জোনাল সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য বলেন, “দ্ররিদ্র পরিবারগুলি ইন্দিরা আবাসের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না পেলে বর্ষাকালে চরম সঙ্কটের মুখে পড়বেন। দ্রুত দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না এলে আমরা আন্দোলনে নামব।” |