|
|
|
|
মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অপমান’ |
সিপিএমের বিরুদ্ধে অধিকারভঙ্গের নোটিস দিচ্ছে তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের সমবায়-ব্যবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়ে ‘অমর্যাদাকর’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সিপিএম বিধায়ক এমএ সাদির বিরুদ্ধে অধিকারভঙ্গের নোটিস আনতে চায় তৃণমূল। বুধবার অধিবেশন চলাকালীন ওই বিধায়ককে নোটিসটি ধরিয়ে সাক্ষরও করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।
এ দিন অধিবেশনকক্ষে সাদির বক্তৃতার মধ্যেই প্রতিবাদে সরব হয়ে ওয়েলে নেমে আসেন শাসক দলের বিধায়কেরা। স্পিকারকে ঘিরে তাঁরা সাদির মন্তব্যের বিরুদ্ধে ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ আনার দাবি জানান। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন সাদি। সাদি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরে তিনি বলেন, “আমি তো মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার জন্য সমবায়-ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলছিলাম। তখনই তৃণমূল বিধায়কেরা চিৎকার শুরু করেন।” সাদিকে অধিকারভঙ্গের নোটিস ধরানোর আগেই অবশ্য ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ এনে তাঁর মন্তব্য সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সাদিকে তিরস্কারও করেন স্পিকার। তবে তৃণমূলের বিধায়কদের প্রতিবাদের সময়েই বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষকে নিয়ে এক কংগ্রেস বিধায়কের ‘অমর্যাদাকর’ মন্তব্যে কিন্তু স্পিকার ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ আনা দূরে থাক, প্রতিবাদেও কর্ণপাত করেননি। স্পিকার সূর্যবাবুর বক্তব্যও কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেন।
বিরোধী ও শাসক পক্ষের বিধায়কেরা এ দিন আরও কয়েকটি বক্তৃতার অংশ নিয়ে প্রতিবাদে ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ আনার দাবি জানান। কিন্তু স্পিকার পরে জানান, বিধানসভার বিধি অনুযায়ী শুধু অধিবেশন চালানোর পরিস্থিতি হাতের বাইরে গেলেই ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ আনা যেতে পারে। এ দিন একমাত্র সাদির মন্তব্য ঘিরে হট্টগোল ছাড়া অন্য কোনও অভিযোগেই তিনি ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ আনার দরকার আছে বলে মনে করেননি। এদিন উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার তরুণ ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রামজের (ভিক্টর) বক্তৃতায় উদ্ধৃত একটি ‘শের’-এর শব্দ নিয়ে তৃণমূলের তাপস রায় আপত্তি করেন। তাপসবাবু বলেন, “ওই শব্দে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিধায়কদের অপমান করা হয়েছে। বিরোধী দলনেতার উচিত ছিল তরুণ বিধায়ককে সহবত শেখানো।” সূর্যবাবু অবশ্য বলেন, “শেরটি বিখ্যাত কবি ইকবালের। ইকবাল-রবীন্দ্রনাথের কবিতা কেউ বললে কেন আপত্তি করতে যাব?” স্পিকার জানান, সভায় হট্টগোলের জন্য সব সময় সকলের বক্তব্য ভাল ভাবে শোনা যায় না। ওই বিধায়ক কী বলেছেন, খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। দরকারে আপত্তিকর অংশ বাদ দেওয়া হবে। ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহও এ দিন ইমরানের সঙ্গে কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে কটাক্ষ করে ইমরান বলেন, তাঁর জেলার এসপি কংগ্রেস বা বাম-বিধায়কদেরও ফোন ধরেন না। সব সময় বলে বেড়ান, তিনি সোনালি গুহ-র জামাইবাবু। সোনালি তখন অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না। নিজের কক্ষে বক্তৃতার অংশটুকু শুনে তিনি সভাকক্ষে ঢুকে ইমরানকে প্রশ্ন করেন, “এই জামাইবাবুটা কে?” ডেপুটি স্পিকার জানান, তাঁর কোনও জামাইবাবুই নেই! ইমরানের বক্তব্য, ওই এসপি এমন দাবি করলে তিনি কী করবেন! ইমরানের বক্তৃতা শেষের পরেও বেশ কিছু ক্ষণ সোনালি চড়া সুরে তাঁর ক্ষোভ জানাতে থাকেন। |
|
|
|
|
|