লরির ধাক্কায় জখম হয়েছিলেন এক সাইকেল আরোহী। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে তুলকালাম বাধে বসিরহাটের শাঁকচুড়োর কোদালিয়া গ্রামে। পুলিশের দু’টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায় জনতা। পুলিশকর্মীদের আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জখম হয়েছেন তাঁদের ৪ জন। আহত নুরউদ্দিন মোল্লার চিকিৎসা চলছে বাগুইআটির একটি নার্সিংহোমে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাজার সেরে সাইকেল নিয়ে দক্ষিণ বাগুন্ডি রাস্তা ধরে উত্তর কোদালিয়ার বাড়িতে ফিরছিলেন নুরউদ্দিন। তিনি পানিতর হাইস্কুলের শিক্ষক। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কোদালিয়া আমিনিয়া হাইমাদ্রাসার সামনে উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরি তাঁকে ধাক্কা মারে। মাদ্রাসা চত্বরে সে সময়ে জলসা চলছিল। মেলা বসেছিল। প্রচুর মানুষ হাজির ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রচুর মানুষ বেরিয়ে আসেন। চালক লরি ফেলে পালান। উত্তেজিত জনতা লরিতে ভাঙচুর চালায়। স্থানীয় মানুষ নুরউদ্দিনকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে। রাতেই তাঁকে পাঠানো হয় বাগুইআটির নার্সিংহোমে। |
এ দিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এলে বিক্ষোভের মুখে পড়ে। তখনকার মতো ফিরে যায় তারা। রাত আড়াইটে নাগাদ লরি উদ্ধারের জন্য পুলিশ ফের আসে। জনতা দাবি তোলে, লরি চালক মদ্যপ ছিলেন। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে আহত ব্যক্তির পরিবারকে।
পুলিশের গাড়ি দু’টি উল্টে ফেলা হয় রাস্তার পাশের খেতে। পুলিশের গাড়ির মধ্যে রাখা নানা সরঞ্জাম বের করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক জন পুলিশকর্মীকে মারধর করে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ভোরের দিকে বসিরহাট থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে সহকর্মীদের উদ্ধার করে।
গ্রামবাসীদের তরফে আবদুল মালেক গাজি, বাপি মোল্লা, মোমতাজ আলি মোল্লারা জানান, আশপাশে কয়েকটি ইটভাটা আছে। সেখানে প্রচুর লরি যাতায়াত করে। অথচ রাস্তা সারানোর কোনও উদ্যোগ করে না ভাটা মালিকেরা। তা নিয়ে গ্রামের মানুষের ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের। এর মধ্যে আবার মদ্যপ লরি চালক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলায় ক্ষোভ চরমে পৌঁছয়। পুলিশ লরি ও ইটভাটা মালিকদের পক্ষ নিয়ে লরি উদ্ধারে এসেছে বলে রটে যায়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হলেও পুলিশকর্মীদের মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়।
মতিয়ার মণ্ডল, রুহুল আমিন, মতিয়ার রহমানদের বক্তব্য, “দুর্ঘটনার পরে বার বার ফোন করা হলেও পুলিশ সময় মতো আসেনি। তার উপর, কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই গভীর রাতে ঘাতক লরিটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সব কারণেই উত্তেজনা ছড়ায়।”
অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের দাবি, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশকর্মীদের মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |