চার জেলায় ৫০০টিরও বেশি ছিনতাই, বহু চুরি এবং ডাকাতিতে অভিযুক্ত এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল হাবরা থানার পুলিশ। বুধবার ভোরে হাবরার চোংদা মোড় এলাকা থেকে শ্যামল দাস নামে ওই দুষ্কৃতীকে ধরা হয়। অপরাধ জগতে সে ‘হাতকাটা শ্যামল’ নামেই বেশি পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ দিনই ধৃতকে বারাসত জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত স্বীকার করেছে, অন্যান্য অপরাধ ছাড়াও সে ৫০০টির বেশি ছিনতাই করেছে।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন, বছর ত্রিশের ওই দুষ্কৃতীর বাড়ি নদিয়ার হরিণঘাটার নগরউখড়ায়। তবে দীর্ঘদিনই সে বাড়িতে থাকত না। হাবরা, গুমা, বারাসত, দমদম, হুগলির শ্রীরামপুর, নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় ডেরা বানিয়েছিল। দশ বছরেরও বেশি আগে লোকাল ট্রেনে মহিলাদের হার ছিনতাইয়ের মাধ্যমে শ্যামলের অপরাধে হাতেখড়ি হয়। |
কয়েক বার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তাকে হাজতবাসও করতে হয়েছে। কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে সে ফিরে গিয়েছে অপরাধ জগতেই। সম্প্রতি হাবরা থানা এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই, কেপমারি, বোমাবাজির মতো অপরাধের তদন্তে নেমে পুলিশ শ্যামলের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে। শিয়ালদহ থেকে বালিগঞ্জ এবং ব্যান্ডেল থেকে বর্ধমান পর্যন্ত লোকাল ট্রেনে সে ছিনতাই করত। ২০০৫ সালে বামনগাছিতে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে শ্যামলের ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। তার পর থেকেই তার পরিচিতি ‘হাতকাটা শ্যামল’ নামে। এ ছাড়াও, ‘টুন্না’ ও ‘গাঙ্গুলি’ নামেও সে পরিচিত।
জেলা পুলিশ শ্যামলের গ্রেফতার হওয়াকে ‘বড় সাফল্য’ হিসেবে দেখছে। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “ধৃতের কাছ থেকে ৫ কেজি ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির জন্য শ্যামল আলাদা দল গড়েছিল। তাকে জেরা করে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার দলের বাকিদের খোঁজে এখনও তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনে মহিলাদের হার ছিনতাই দিয়ে অপরাধ শুরু করলেও শ্যামল কয়েক বছরের মধ্যে চুরি-ডাকাতিতেও হাত পাকায়। দলবল নিয়ে সে দুই ২৪ পরগনা ছাড়াও হাওড়া ও হুগলির বেশ কিছু পেট্রল পাম্পে ডাকাতি করেছে। কিছু দিন আগে হাবরা শহরের একটি সর্ষের তেলের গুদাম থেকে টাকা ভর্তি সিন্দুক লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনাতেও শ্যামল ও তার দলবল জড়িত বলে পুলিশের অনুমান। মাস দুয়েক আগে বেলঘরিয়ার কাছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ছিনতাই হয় একটি গাড়ি থেকে। সেই ঘটনাতেও শ্যামল অভিযুক্ত। অন্য দিকে, বেআইনি ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে হাবরা বাজার এলাকা থেকে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। আটক করে ৫০ হাজার টাকার মদ। |