মৃতপ্রায় টেবিল টেনিসের পুরুজ্জীবনে অবশেষে উদ্যোগী হল বহরমপুর ‘যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনী’ (গ্রান্টহল)। তারই অঙ্গ হিসাবে গত মঙ্গলবার ‘যোগেন্দ্রনারায়ন মিলনী’-র গ্রান্টহলে হয়ে গল ২০১২ সালের আন্তঃ জেলা টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা।
গত রবিবার থেকে তিন দিন ধরে হয়ে গেলে ‘ইন্টার ডিস্ট্রিক্ট টেবিল টেনিস কম্পিটিশন ২০১২’। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক বছর চল্লিশের অশোক ঘোষকে ৩-১ গেমে হারিয়ে চাম্পিয়ান হলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী অরূপ ভৌমিক। |
রানার্স অশোক ঘোষ ও তাঁরই সমবয়সী চাম্পিয়ান অরূপ ভৌমিক দু’জনেরই বাড়ি বহরমপুর শহরে। দু’জনেই বেশ কয়েক বার রাজ্যস্তরে টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় খেলেছেন। ‘যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনী’ (গ্রান্টহল)-র ক্রীড়া বিভাগের সম্পাদক উৎপল সিংহ বলেন, “আমরা নিজেরা ‘গ্রান্টহল’-এর ভিতরে টেবিল টেনিস খেললেও এবারই প্রথম সেখানে আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতামূলক খেলার আয়োজন করা হয়। মৃতপ্রায় টেবিল টেনিসের পুনরুজ্জীবনের কথা মাথায় রেখে ওই আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগী ছিলেন ২০ জন।” অরূপ বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে বলা সত্ত্বেও মৃতপ্রায় টেবিল টেনিসের পুনরুজ্জীবন নিয়ে সরকারি ভাবে এ পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ নেই। এ কারণে ‘যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনী’র কর্মকর্তারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।” অশোক বলেন, “আগে বহরমপুর শহরের ৪-৫টি ক্লাবে টেবিলটেনিস খেলার দারুন চল ছিল। সেই সুদিন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হল।”
বহরমপুরের ইতিহাসে এই হলঘরটির নিজস্ব জায়গা রয়েছে। ১৯২৮ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে এখানেই সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বহরমপুর শহরের ‘যুবসংঘ’ নামের সংস্থার সদস্যরা। রামদাস সেন, বৈকুন্ঠনাথ সেন-সহ বহরমপুরের ১৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক ১৮৬৬ সলে মেজর জোশেফ ম্যারিয়নের বাড়িটি কিনে নেন। ওই বাড়ির মধ্যের ডিম্বাকৃতি হলঘরটির নাম দেওয়া হয় ‘গ্রান্টহল’। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়। লালগোলার মহারাজা যোগেন্দ্রনারায়ণ রাও-এর অর্থানুকুল্যে পুনরায় নির্মাণ করে ওই বিশাল ভবনটির দ্বারোদ্ঘাটন করা হয় ১৯১১ সালের ২ অগস্ট। ১৯৪৮ সালে ওই ঐতিহাসিক ভবনের নামকরণ হয় ‘যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনী’। তার সম্পাদক কল্যাণ মজুমদার বলেন, “ওই ভবনের প্রাঙ্গণে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি লং টেনিস খেলার কাহিনি কিন্তু ঐতিহ্যকেই স্মরণ করায়। বহু গুরুত্বপূর্ণ সভার মতোই টেনিস খেলাও ওই ঐতিহ্যশলী ভবনের ইতিহাসেরই অঙ্গ।” |