পরীক্ষাকেন্দ্র দূরে, নাকাল ছাত্রছাত্রীরা
দূরদুরান্তের পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে গিয়ে এ বার নাজেহাল হচ্ছেন মুর্শিদাবাদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। কোথাও কোথাও পরীক্ষার্থীদের ২০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। সর্বত্র বাস বা ট্রেনের বন্দোবস্ত নেই। তাই শেষ পর্যন্ত কেউ কেউ গাড়ি ভাড়া করে যাচ্ছেন, যাঁদের সেই সংস্থান নেই, তাঁদের কিছুটা রাস্তা যেতে হচ্ছে ভ্যানে বা হেঁটে। তাতে সময় যেমন বেশি লাগছে, তেমনই পরিশ্রমও হচ্ছে। সুতির কাশিমনগর উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক জুলফিকার আলি বলেন, “প্রতি বছর সিট পড়ে ১৫ কিলোটিমার দূরের আহিরণে। এ বার আমাদের স্কুলের পরীক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে ৩০ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত হারুয়া হাইস্কুলে। সেখানে কোনও যানবাহন চলে না। ফলে নাকাল হচ্ছে পরীক্ষার্থীরা।”
বহরমপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার আগের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
অথচ, সংসদ এ বার চেয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা যাতে তাঁদের বাড়ির কাছেই পরীক্ষা দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে। সেই সঙ্গেই সংসদ চেয়েছিল, পরীক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন, তাই একটি কেন্দ্রে ৫০০ জনের বেশি পরীক্ষার্থী থাকবেন না। এই দ্বিতীয় নিয়মটির জন্যই পরীক্ষাকেন্দ্র দূরে হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সুষ্ঠু ভাবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে মুর্শিদাবাদে ২১ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল আজিজ বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ বার নির্দেশিকায় বলেছিল কোনও কেন্দ্রে পাঁচশোর বেশি পরীক্ষার্থী থাকবে না। ফলে আগে যে সব বড় বড় স্কুলে দেড় হাজারেরও বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে, সেখানেও সংখ্যাটা এ বার পাঁচশোই রাখতে হয়েছে। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়াতে হয়েছে। সেই পরীক্ষাকেন্দ্র হয়ে গিয়েছে পরীক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে বেশ দূরে।” ওই কমিটির আর এক সদস্য বদরুজ্জোমা খান বলেন, “যাঁরা এ বার কমিটিতে এসেছেন, তাঁরা জেলার ভূগোলই ভাল জানেন না। তাই কোন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে কোন এলাকায় পরীক্ষা দিতে যেতে সুবিধা হবে, তা তাঁরা জানেন না। তাই এই বিপত্তি ঘটেছে।” সাগরদিঘি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক তামিজুদ্দিন মল্লিকের কথায়, “এ বারে আমাদের স্কুলের ছেলেমেয়েদের যেতে হচ্ছে ২০ কিলোমিটার দূরের মোরগ্রামে। সেখানে যেতে দু’বার যানবাহন পাল্টাতে হয়।” তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলেও পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে। যার উপকেন্দ্র হয়েছে মণিগ্রাম হাইস্কুলে। সেখানে বেঞ্চ নেই, অন্ধকার ঘরে আলো ঢোকে না। অন্য স্কুল থেকে বেঞ্চ এনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।” শ্রীকান্তবাটী হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছে ২০ কিলোমিটার দূরের বোখরায়। বাড়ালা হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীরা যাচ্ছেন ২০ কিলোমিটার দূরের খামরা-ভাবকি স্কুলে। ধুলিয়ানের বাসুদেবপুর-চাচণ্ড স্কুলের উপকেন্দ্র হয়েছে ডিবিএস মাদ্রাসা ও ভাসাই পাইকরে। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই দু’টি স্কুলের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। কাঞ্চনতলা স্কুলের পরীক্ষার্থীরা যাচ্ছেন ১৫ কিলোমিটার দূরের নিমতিতায়। ফরাক্কার অর্জুনপুর স্কুলের প্রধানশিক্ষক রফিকুলওয়ারা আবার পড়েছেন অন্য সঙ্কটে। মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র করা হয়েছিল এই স্কুলকে। এ বার উচ্চ মাধ্যমিক কেন্দ্রও করা হয়েছে। তিনি বলেন, “২১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষার জন্য স্কুলে ক্লাস বন্ধ। ইউনিট টেস্টও নেওয়া যায়নি। এর আগে এই অব্যবস্থা আগে কখনও হয়নি।” আব্দুল আজিজ বলেন, “অনভিজ্ঞতার ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। তবে আমরা যা যা ভুল হচ্ছে, তা লিখে রাখছি। যাতে ভবিষ্যতে এই সব ত্রুটি শুধরে নেওয়া যায়।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুভেন্দুবিকাশ দত্ত বলেন, “এ ব্যাপারে আমার কোনও ভূমিকা আগেও ছিল না, এখনও নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.