|
|
|
|
পরিত্যক্ত আবাসনে দুষ্কৃতীদের আখড়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
‘অচল’ কারখানার পরিত্যক্ত আবাসন। নজরদারির অভাবে জীর্ণ সেই আবাসনের দরজা-জানলাও খুলে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। ফাঁকা বাড়িতে আখড়া বানিয়েছে সমাজবিরোধীরা। দেখার কেউ নেই। হলদিয়া টাউনশিপের হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশনের (এইচএফসি) আবাসন তাই আক্ষরিক অর্থেই ভূতুড়ে আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
১৯৮২ সালে এই কারখানা চালু হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই নানা সমস্যায় ধুঁকতে থাকে কারাখানাটি। ১৯৮৬ সালে বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন। ১৩০০ কর্মীকে বেতন দিতে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠে কর্তৃপক্ষের। অবশেষে ২০০৩ সালে বন্ধই হয়ে যায় সংস্থাটি। কেন্দ্রীয় সার-মন্ত্রকের অধীনস্থ এই সংস্থার প্রায় ১২৪৮ জন কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর নিতে বাধ্য করা হয়। হাতে গোনা ৩০-৩৫ জন কর্মী শুধু জলপ্রকল্পের কাজে যুক্ত থাকেন। কমতে-কমতে সেই কর্মীর সংখ্যাও ৭ জনে এসে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে, বন্দরের কাছ থেকে লিজে পাওয়া জমিতে প্রায় সাড়ে এগারোশো পরিবারের থাকার জন্য আবাসন গড়ে তোলা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে সাতশো ফ্ল্যাট এখন পরিত্যক্ত। বাকিগুলিতে ভাড়ায় রয়েছেন বহু প্রাক্তন কর্মী। জমির লিজের মেয়াদ ১৯৯২ সালে শেষ হয়ে গেলেও পুনর্নবীকরণ হয়নি আর। ফলে মালিকানা নিয়ে একটা জট রয়েছেই। নজরদারির অভাবের অন্যতম কারণ এই জট। এক দিকে পরিত্যক্ত আবাসনগুলির দেওয়াল ধসে যাচ্ছে, ফাঁকফোঁকরে গজিয়ে উঠছে গাছপালা। অন্য দিকে নজরদারি না থাকায় জানলার লোহার গ্রিল থেকে শুরু করে কাঠের দরজা, জলের পাইপ, ইলেকট্রিকের তারসবই ‘উধাও’ হয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে। সবকিছু জেনে-বুঝেও ‘নির্বিকার’ কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ-প্রশাসন। অন্তত, বাসিন্দাদের অভিযোগ এমনটাই। এইচএফসি-র প্রাক্তন কর্মী তথা স্থানীয় আবাসিক সতীনাথ ভট্টাচার্যের কথায়, “এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে। আর এই আবাসনই তার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। কোনও-কোনও ফ্ল্যাটে নিয়মিত মদের আসর বসায় দুষ্কৃতীরা। ডেপুটেশন দিয়ে সমস্যার কথা সকলকে জানানো হয়েছে। লাভ হয়নি। আমরা অতিষ্ঠ।”
এইচএফসি-র জেনারেল ম্যানেজার শুভেন্দুশেখর গোস্বামী অবশ্য বলেন, “আমরা পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েছি। নিজেরাও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।” আর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অমিতাভ মাইতির দাবি, “আমরা বেশ কয়েক বার পরিত্যক্ত আবাসনে হানা দিয়ে স্থানীয় কিছু ছেলেকে ধরেছি। অনেক সময়ে কলেজ পড়ুয়ারাও আড্ডা দিতে যায়। এরা কেউই দাগি আসামী নয়। তবুও ওই এলাকায় ছোটখাটো একটা পুলিশ ক্যাম্প বসানোর চেষ্টা করা হবে।” |
|
|
|
|
|