মোহনবাগান- ৬ (ওডাফা-হ্যাটট্রিক সহ ৪, নবি, মণীশ)
এরিয়ান- ০ |
ওডাফা-তাণ্ডবে উড়ে গেল রঘু নন্দীর বঙ্গ-ব্রিগেড।
যে এরিয়ান কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলকে ৪-১ গোলে হারিয়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল, সেই দলই বুধবার যুবভারতীতে হাফ ডজন গোল হজম করল মোহনবাগানের কাছে। মাত্র পঞ্চাশ মিনিট মাঠে ছিলেন ওডাফা ওকোলি। তার মধ্যেই হ্যাটট্রিক সহ চার গোল করে পর্দা টেনে দিলেন। যতক্ষণ মাঠে ছিলেন স্কিলের ভরপুর ঝলক দেখালেন। চারটে গোলই করলেন তিন-চার জন ডিফেন্ডারকে কাঁধে নিয়ে। একদম যেন অ্যাকশন রিপ্লে দেখাচ্ছেন!
ওডাফা চার গোল করলেও উস্কে দিয়ে গেল এক পুরনো আলোচনাকেও। সেই স্বদেশি বনাম বিদেশি তর্ক। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এ দিন কোনও বিদেশি ফুটবলার ছাড়াই মাঠে নেমেছিলেন রঘু। আই এফ এ-র ব্যর্থতায় স্থানীয় লিগ পিছিয়ে যাওয়ায় যেই দুর্ভোগে ভুগছে ময়দানের ছোট ক্লাবগুলো। এরিয়ান কোচ বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে এই ম্যাচটা গুলিয়ে ফেললে চলবে না। যতই বড় বড় কথা বলি না কেন, বিদেশি ছাড়া খেলা যায় না।” মোহনবাগান টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য অবশ্য অন্য যুক্তি দিলেন, “আমরাও তো বিদেশি ছাড়া শেষ ৪০ মিনিট খেললাম। তাতে কী হয়েছে?” একদম ঠিক। তবে এটাও সত্যি, ওডাফার হাত ধরেই গোলের বোঝা চাপিয়েছিল মোহনবাগান। তবে ব্যারেটো শুরুতে নামলেও মাত্র ২২ মিনিটেই বেরিয়ে যান মাঠ ছেড়ে। চোটের জন্য। |
বুধবারের নায়কের নাম ওডাফা হলেও, দেড় মাসের ছুটিতে আরও ধারালো হয়ে উঠেছে মোহনবাগানের গোটা দলও! শুধু এক গাদা গোলের বিচারেই নয়, খেলার মানের নিরিখেও। সেজন্যই তো ওডাফা বেরিয়ে যাওয়ার পরেও মোহনবাগান আক্রমণের ঝাঁঝ কমেনি মনীশ মৈথানি, এন পি প্রদীপের সৌজন্যে। ছোট ছোট পাস, উইং প্লে- সব বিভাগেই জ্বলে উঠল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। সবচেয়ে বেশি চোখ টানলেন মনীশ। একটা গোল তো করলেনই, একই সঙ্গে ওডাফাকে বল বাড়ানোর কাজে লেটার মার্কসও পাবেন তিনি। ওডাফার মুখেও মণীশ-বন্দনা। বললেন, “ঠিক সময়ে ঠিক বল পেয়েছি। আমার গোলগুলো সতীর্থদেরই করা।” গোল পেলেন রহিম নবিও। স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বদলে ম্যাচের শেষ আধ ঘণ্টা মাঠে নেমেছিলেন তিনি। অসীম বিশ্বাস ও সুনীল ছেত্রী দু’একটা গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে, ব্যবধান আরও বাড়তে পারত মোহনবাগানের। তবে ছ’গোলে জিতলেও, কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এখনও ইস্টবেঙ্গলের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে মোহনবাগানকে। সুব্রত ভট্টাচার্য অবশ্য বললেন, “আমার প্রধান লক্ষ্য আই লিগ। কলকাতা লিগের ম্যাচগুলো শুধু জিততে চাই।”
কলকাতা লিগের ভবিষ্যৎ যাই হোক না কেন, রবিবার পুণেতে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে আই লিগ ম্যাচের আগে ছ’গোলের বড় জয় নিশ্চয়ই বাড়িয়ে তুলবে ব্যারেটো-ওডাফাদের আত্মবিশ্বাস!
মোহনবাগান: শিল্টন, কিংশুক, আনোয়ার, সুরকুমার, দীপক, প্রদীপ, মণীশ, রাকেশ, স্নেহাশিস (নবি), ব্যারেটো (সুনীল), ওডাফা (অসীম)। |