বিষকাণ্ডের পর তিনমাস পার হয়ে গিয়ে হয়েছে। ফের পুরোনো চেহারায় ফিরতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে যাওয়া করলা নদী। গত বছর নভেম্বর মাসে নদীতে বিষকাণ্ডে প্রচুর মাছের মড়কের পরে নড়েচড়ে বসে পুরসভা-প্রশাসন। নদীকে দূষণের কবল থেকে রক্ষা করতে সব ধরনের আবর্জনা নদীতে ফেলা নিষিদ্ধ করা হয়। প্রশাসনিক কড়াকড়িতে সাময়িক রেহাই মিললেও চলতি মাসের প্রথম থেকেই নদী ফের পুরোনো দশাতেই ফিরতে শুরু করেছে দিনবাজার এলাকায় নদীতে থার্মোকলের বাক্স, হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় বড় বড় প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ ভরা বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। গত সপ্তাহে বাবুঘাট এলাকাতে নদীতে একটি গরুর পচে যাওয়া দেহ ভাসতে দেখা যায়। এই ঘটনার পরেই নদীতে দূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন পুর কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন নদী থেকে আবর্জনা তোলা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের মতে, করলা নদীতে সর্বক্ষণ নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। তার বদলে প্রতিদিন নদী পরিষ্কার করে দূষণ প্রতিহত করা হবে।
বিষকাণ্ডের পরে পুরসভার তরফে প্রতিমাসে একবার করলা নদীর জল পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়। চলতি সপ্তাহে পুরসভা আগের সিদ্ধান্ত বদলে মাসে একবারের পরিবর্তে প্রতিদিন করলা নদীর জল পরিষ্কার করবে বলে ঠিক করে। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “করলা নদীতে দূষণের থেকে রক্ষা করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নিয়েছে পুরসভা। আগামী আর্থিক বছরের পুর বাজেটে করলা নদীর জন্য বড় অঙ্কের টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নদীতে প্রতিদিন সকালে আবর্জনা তোলার কাজ করবে পুরসভা।” নদীর দূষণ প্রতিরোধে পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিধান আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান দলটির কাজের নজরদারি চালাবেন। গত সোমবার থেকে পুরসভার কর্মীরা নৌকা নিয়ে নদী থেকে সব ধরণের আবর্জনা সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করেছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “করলা নদী নিয়ে পুর কর্মীদের নিয়ে একটি বিশেষ টিম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই নদী থেকে আবর্জনা তোলার কাজ হবে। পাশাপাশি, শহরবাসীকে আরও সচেতন হতে হবে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের বুক চিরে যে পথে ২০ কিলোমিটার করলা নদী বয়ে গিয়েছে তার একপ্রান্ত থেকে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ চলবে। সাত দিনের মাথায় শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া গোটা নদী থেকে আবর্জনা তুলে ফেলার কাজ শেষ হলে পরের দিন আবার প্রথম প্রান্ত থেকে কাজ শুরু হবে। প্রতিদিন সকালে বিশেষ দলের প্রতিনিধিরা গাড়িতে চেপে নদীর পাশ দিয়ে নদীতে নজরদারি চালাবেন। |