|
|
|
|
ফের সময়সীমা বাড়াল মাওবাদীরা |
দুই ইতালীয়ের মুক্তি নিয়ে কেন্দ্র-নবীন চাপান-উতোর |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ওড়িশায় অপহৃত দুই ইতালীয় নাগরিকের মুক্তির ব্যাপারে কিছুটা সুর নরম করল মাওবাদীরা। প্রাথমিক ভাবে, ওই দুই বিদেশির মুক্তির শর্ত হিসেবে মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলে অভিযান বন্ধ ও তাদের নেতাদের মুক্তি-সহ মোট ১৩টি দাবি জানিয়েছিল তারা। এ দিন মাওবাদীদের তরফে এক শীর্ষ নেতা স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলকে জানান, অপহৃতদের মুক্তির ব্যাপারে তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। মাওবাদীরা এ-ও জানিয়েছে, কথা শুরুর আগেই তারা এক ইতালীয়কে ছাড়তে রাজি। তবে তার বিনিময়ে আপাতত পাঁচ বন্দির মুক্তির পাশাপাশি ভুয়ো সংঘর্ষ ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে।
আর এই জন্য সময়সীমা আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়াল মাওবাদীরা। মানবাধিকার কর্মী দণ্ডপাণি মহান্তি বলেন, “কাল মাওবাদীদের দেওয়া ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা আজ সন্ধেয় শেষ হচ্ছে। সেই সময়সীমা আরও এক দিন বাড়ানো হয়েছে।” পাশাপাশি তাঁর প্রস্তাব, এই সঙ্কট মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন জেলে বন্দি মাওবাদী নেতা নারায়ণ সান্যাল, অমিত বাগচি এবং কোবাড গাঁধীকে ভুবনেশ্বরে আনার জন্য কেন্দ্রকে বলুক রাজ্য।
মাওবাদীদের তরফে জট কাটানোর উদ্যোগ দেখা গেলেও এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারের মধ্যে নতুন করে কাজিয়া বেধেছে। কালই মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক দাবি করেছিলেন, ইতালীয়দের মুক্ত করার ব্যাপারে কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্য করা হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি উড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমেরর পাল্টা দাবি, নবীন যতই দাবি করুন, রাজ্য প্রশাসনের তরফে ‘অপহরণ কাণ্ডে’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যখন তাঁকে ফোনে ঘটনার কথা জানাচ্ছিলেন, তখন তিনিই কেন্দ্রের তরফে সব রকম সাহায্য দেওয়ার কথা জানান। চিদম্বরম আজ বলেন, “সত্যিই যদি মুখ্যমন্ত্রী এ ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য করে থাকেন, তা হলে তা দুর্ভাগ্যজনক। রবিবার যখন উনি আমাকে ফোন করেন, তখন আমি সব রকম সাহায্যের কথা বলেছিলাম। কিন্তু উনিই বলেন, এ বিষয়ে রাজ্যের কোনও সাহায্যের প্রযোজন নেই। বিষয়টি কেবল মাত্র জানাতেই তিনি ফোন করেছেন।” চিদম্বরমও আরও জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবও গত দু’দিনে বহু বার ওড়িশার স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজি’র সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরাও কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চাননি।
মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় নেমেছে রাজ্যে বিরোধী দল কংগ্রেসও। তাঁদের দাবি, ইতালীয়দের মুক্তির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ‘রাজনৈতিক’ ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তার’ প্রতিবাদে এ দিন বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস বিধায়কেরা। কংগ্রেসের সঙ্গেই এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছে বিজেপি।
এ বিষয়ে আজ মুখ খোলেননি নবীন। তিনি জানান, কথার লড়াইয়ে না গিয়ে তাঁর এখন প্রাথমিক কর্তব্য দ্রুত বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করা। সরকার জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রসচিব ইউ এন বেহরা-সহ তিন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাওবাদীদের তরফে ঠিক করা মধ্যস্থতাকারী সমাজকর্মী বি ডি শর্মার সঙ্গে আলোচনা চালানোর। |
|
|
|
|
|