সরলেন ‘পছন্দের’ প্রার্থী, দলেই একঘরে গডকড়ী
ত্তরপ্রদেশের ভোটে লালকৃষ্ণ আডবাণীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও কৌশল বদলাননি নিতিন গডকড়ী। ভোটে ভরাডুবি হয়েছে দলে। এ বারে রাজ্যসভার প্রার্থী বাছাই বিতর্কেও পিছু হঠলেন গডকড়ী। আঁচ পড়ল তাঁর নেতৃত্বেও। বিবাদ চরমে ওঠায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন ঝাড়খণ্ডের বিতর্কিত নির্দল প্রার্থী অংশুমান মিশ্র।
রাজ্যসভায় দলের উপনেতা সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে প্রার্থী না করানোর জন্য বেজায় চটেছেন সুষমা স্বরাজ। আগেই তিনি দলের মধ্যে তাঁর ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন এ নিয়ে। সমর্থন জানান আডবাণীরও। দলে আলোচনা না করেই ঝাড়খণ্ডে যে ভাবে নির্দল প্রার্থী অংশুমান মিশ্রকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেন গডকড়ী, তখন এই ক্ষোভ বিস্ফোরণের আকার নেয়। যশবন্ত সিন্হার মতো নেতা প্রকাশ্যেই নিতিন গডকড়ী-অরুণ জেটলির অক্ষের বিরোধিতা করে বলেন, বিজেপি কেনাবেচাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আডবাণী-সুষমাদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে উত্তরপ্রদেশের ভোটে বাবুসিংহ কুশওয়াহাকে নিয়ে এসে এমনিতেই মুখ পুড়িয়েছেন গডকড়ী। ভোটের ফল প্রকাশের পরেও শেষ হাসিটা তিনি হাসতে পারেননি। এ বারে ঝাড়খণ্ড থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে বিতর্কে ফের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় একঘরে হলেন তিনি। অরুণ জেটলিও প্রকাশ্যে অংশুমানের বিরোধিতা করছেন। আরএসএসও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “অংশুমানের প্রতি সঙ্ঘের সমর্থন নেই। এই সিদ্ধান্ত বিজেপি ও সঙ্ঘের দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনে আঁচ ফেলবে।”
আজ দুপুরে সংসদে সুষমা স্বরাজ তাঁর ঘনিষ্ঠ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া, অনন্ত কুমার ও যশবন্ত সিন্হার উপস্থিতিতে অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে রাজ্যসভার প্রার্থী নিয়ে তুমুল বাদানুবাদ হয়। কারণ, গডকড়ী দলের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মুম্বইয়ে ঝাড়খণ্ডের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে অংশুমানকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অংশুমান আজ সকাল থেকে আডবাণীর নাম না করে তাঁকে আক্রমণ করেন। বলেন, “যাঁরা জিন্নাকে সমর্থন করেছেন, তাঁদের অবসর নেওয়া উচিত।” আডবাণীর এই অপমান কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে মন্তব্য করেন সুষমা। গডকড়ীর অনুপস্থিতিতেই সুষমার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অংশুমানকে বিজেপি সমর্থন করবে না। অনন্ত কুমার বাইরে এসে সে কথা জানান। বলেন, “বিজেপির শীর্ষ নেতাকে যে অপমান করা হয়েছে, দল তা সহ্য করবে না। ঝাড়খণ্ডে বিজেপি অংশুমানকে সমর্থন করবে না। দল ভোটদানে বিরত থাকবে।”
জেটলি অবশ্য পরে ঘনিষ্ঠ মহলে জানান, এই বৈঠক হওয়ার আগেই গডকড়ী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টেলিফোনে গডকড়ীর সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে। একই সঙ্গে জেটলি দাবি করেন, অংশুমানের প্রার্থীপদের বিরোধিতা করেন তিনিও। দলের মধ্যে এই পরিস্থিতিতে একঘরে হয়ে পড়েন গডকড়ী। ফলে অংশুমানের পক্ষেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। গোটা গতিবিধিতে আডবাণী প্রকাশ্যে না এলেও তিনি পিছনে থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বস্তুত, আডবাণীর সমর্থনেই সুষমা উদ্যোগী হয়ে গডকড়ীর নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানান। কিন্তু আডবাণী শিবির মনে করছে, গোটা ঘটনায় এই বর্ষীয়ান নেতার নেতৃত্বই প্রতিষ্ঠিত হল। দলের মধ্যে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতারা নিজেদের মধ্যে যত কোন্দলে জড়িয়ে পড়বেন, আডবাণীর নেতৃত্বই আরও গুরুত্ব পাবে। এর আগে উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগেও কৌশল পরিবর্তন করতে বলেন আডবাণী। গডকড়ী শোনেননি, ভোটেও ভাল কিছু করতে পারেননি। উল্টে দুর্নীতির সঙ্গে আপস করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেন। এ বারেও গডকড়ীর নেতৃত্ব যে ভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল, তা নিয়ে যে ভাবে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতারা বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন, তাতে হয়তো শেষ হাসিটা হাসলেন আডবাণীই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.