|
|
|
|
উপনির্বাচনের ফল |
কর্নাটক-গুজরাতে বিজেপির হার, অন্ধ্রে সঙ্কটে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
এ বছরের শেষ দিকে গুজরাতে ভোট। কর্নাটকে ভোট হবে সামনের বছর। তার আগে গুজরাত ও কর্নাটকের উপনির্বাচনে বিপর্যয় আজ উদ্বেগে ফেলে দিল বিজেপি-কে। তেমনই আশার ক্ষীণ আলো দেখলেও কংগ্রেসের কপালে ভাঁজ ফেলেছে অন্ধ্রের তেলেঙ্গানার ফলাফল। তেলেঙ্গানার সাতটি আসনে মুছে গিয়েছে কংগ্রেস। আগামী মাসে তেলেঙ্গানার ১৮টি আসনের উপনির্বাচনেও এই ধারা অব্যাহত থাকলে অন্ধ্রে সরকারই হাতছাড়া হতে পারে কংগ্রেসের।
তেলেঙ্গানার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে আগের সাত বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ায় সেখানে উপনির্বাচন হয়। এগুলির মধ্যে চারটি আসন জিতেছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি ও একটি করে আসন পেয়েছে বিজেপি, নির্দল ও জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াই এস আর কংগ্রেস। এই ফলাফলের বার্তা একটাই পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবির বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসকে এ বার গুরুত্ব দিয়েই ভাবতে হবে।
ছয় রাজ্যের উপনির্বাচনের ফলে সব থেকে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে গুজরাত ও কর্নাটকের ফলাফল। গুজরাতের মানসা বিধানসভা কেন্দ্রটি গত ১৭ বছর বিজেপির দখলে ছিল। বিধানসভার স্পিকার মঙ্গলদাস পটেল জিতেছিলেন এই আসনে। তাঁর মৃত্যুতেই আসনটি শূন্য হয়। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ হওয়া সত্ত্বেও এমন একটি আসনে বিজেপি হেরেছে। বিধানসভা ভোটের আট মাস আগে এই ফলকে তাই সতর্ক ঘণ্টা হিসাবেই দেখছে বিজেপি।
কর্নাটক নিয়ে বিজেপির উদ্বেগ আরও বড়। ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে সম্প্রতি চিকমাগালুরের সাংসদ সদানন্দ গৌড়াকে মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি। সে কারণেই লোকসভার ওই আসনটিতে উপনির্বাচন হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ছেড়ে যাওয়া লোকসভা কেন্দ্রেই হেরে গিয়েছে বিজেপি। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিলক্ষণ বুঝছেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার ‘হাতযশেই’ এই ফল। গুজরাত ও কর্নাটকের ফল বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা বলেই আজ মন্তব্য করেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি।
কংগ্রেস শিবিরের ছবিটা উল্টো। উত্তরপ্রদেশে ভোট বিপর্যয়ের পর দিনই কংগ্রেস দফতরের চত্বরে দাঁড়িয়ে সনিয়া গাঁধী বলেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের ভোটের শিক্ষা নিয়ে গুজরাত ও কর্নাটকের ভোটে পূর্ণ উদ্যমে লড়বে কংগ্রেস। তার আগে উপনির্বাচনের ফল কংগ্রেসকে উৎসাহ জোগাচ্ছে। কংগ্রেস নেতাদের কথায়, বিজেপির দীর্ঘদিনের দুর্গ মানসা কেন্দ্রটি গাঁধীনগর সংলগ্ন। স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার তত্ত্বও খাটে না। কারণ, সেখানে এ বার আনকোরা প্রার্থী দিয়েছিলেন মোদী। তাই আজকের ফলাফলে আপাত ভাবে মনে করা হচ্ছে, রাজ্যে নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা এ বার নিম্নগামী।
আবার কর্নাটকে লোকসভার একটি আসন দখল করেও কংগ্রেস খুশি। বিজেপির কলহের জের এই ভোটে পড়বে বলে আশা ছিল কংগ্রেসের। আর তাই বীরাপ্পা মইলি, মল্লিকার্জুন খার্গে, মুনিয়াপ্পাদের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের চিকমাগালুরের ময়দান কামড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন সনিয়া। আগামী বছর কর্নাটকে বিধানসভা ভোট। দেবগৌড়ার জনতা দল সেকুলারের সঙ্গে জোট গড়ে ভোটে বিজেপিকে পরাস্ত করা যাবে, এমন আশা করছে কংগ্রেস।
কর্নাটকের পাশাপাশি কেরলের পিরাভম বিধানসভার উপনির্বাচনেও জিতেছে কংগ্রেসের শরিক কেরল কংগ্রেস (জ্যাকব)। গত বার মাত্র ১৫৭ ভোটে হারা এই আসনটি ছিনিয়ে নিতে মরিয়া ছিল সিপিএম। কিন্তু এ বারে তারা হেরেছে ১২ হাজারেরও বেশি ভোটে। কেরলে এই মুহূর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ৭১টি আসনই তাদের রয়েছে। তাই আজকের ফলে অনেকটাই স্বস্তিতে রইল কংগ্রেস। ফরওয়ার্ড ব্লক এই আসনে আলাদা প্রার্থী দিয়ে ৯৬টি ভোট পেয়েছে।
উল্লেখ্য, আজ তামিলনাড়ু ও ওড়িশার একটি করে বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলও প্রকাশিত হয়েছে। ওই দুই আসনে রাজ্যে যথাক্রমে এডিএমকে ও বিজু জনতা দলের প্রার্থীরা জিতেছেন। |
|
|
|
|
|