নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
তৃণমূলের বিক্ষোভের জেরে গত দু’দিন ধরে বন্ধ বারাবনির একটি বেসরকারি খনি সংস্থার কয়লা পরিবহণ। রাজ্যের একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পাঠানো যাচ্ছে না।
খনির সূত্রের খবর, দু’দিনে প্রায় সাত হাজার টন কয়লা পরিবহণ করা যায়নি। শতাধিক কয়লা বোঝাই ডাম্পার ও দু’টি খালি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। সংস্থাকে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে। খনি থেকে তোলা কয়লা মজুত করার জায়গা বেশি না থাকায় উৎপাদনও মার খেতে বসেছে। খনি সংস্থার আধিকারিক শান্তনু মহলানবিশ বলেন, “সমাধানের পথ বের করতে আলোচনা চলছে।”
বিক্ষোভের শুরু মঙ্গলবার সকাল থেকে। সংস্থা সূত্রের খবর, ২০০২ সালে খনি চালু হওয়ার পরে কয়লা পরিবহণের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে ঠিকা দেওয়া হয়েছিল। কিছু দিন পরে দেখা যায়, রেল সাইডিং-এ যাওয়ার পথে ডাম্পার থেকে কয়লা চুরি করছে এক দল লোক। তা ঠেকাতে স্থানীয় বেকার যুবকদের দৈনিক মজুরির বিনিময়ে রাস্তার একাধিক জায়গায় পাহারার কাজে লাগায়। গত দশ বছর যাবৎ তাঁরাই পাহারার দিয়ে আসছেন।
কিন্তু দিন কয়েক আগে বারাবনি গ্রামের এক দল যুবক খনি কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেন, আগের লোকেদের পরিবর্তে তাঁদের পাহারার কাজে লাগাতে হবে। কর্তৃপক্ষ তা না মানায় কয়লা পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছেন বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের ভাই, ব্লক যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “সিপিএম ক্ষমতায় থাকার সময়ে তাদের ৪২ জন সমর্থককে পাহারার কাজে ঢুকিয়েছিল। এখন আমরা ক্ষমতায় এসেছি। এ বার আমাদের লোকেদের সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে আমরা কয়লা পরিবহণ করতে দেব না।’’
তৃণমূলের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের চাকরির দাবি অস্বীকার করা যায় না। তবে আমরা এই ধরনের আন্দোলনের বিরোধী।” তাঁর মতে, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মেটানো উচিত। জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোনও দাবিতেই কাজ ব্যাহত করে আন্দোলন সমর্থনযোগ্য নয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এই ধরনের আন্দোলনের বিরোধিতা করছি।” স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হবেন বলে দুই নেতাই জানিয়েছেন। |