নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
পুরসভা নিয়মিত টোলট্যাক্স আদায় করলেও রাস্তা সারায় না। নাসের অ্যাভিনিউ নিয়ে এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শিল্প কারখানার আধিকারিকদের। অবিলম্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
দুর্গাপুরের ওই রাস্তাটি ইন্দো-আমেরিকান মোড়ে জাতীয় সড়ক থেকে বেরিয়ে শিল্পাঞ্চলের ভিতর দিয়ে গিয়ে পৌঁছেছে এইচএফসি-র কাছে। রাস্তার ধারে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু বেসরকারি ইস্পাত কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং ওয়ার্কশপ। ছোট গ্রিল কারখানা, আসবাব কারখানাও রয়েছে।
জাতীয় সড়ক থেকে স্থানীয় খয়রাশোল গ্রামে পৌঁছানোর অন্যতম প্রধান রাস্তা নাসের অ্যাভিনিউ। কিন্তু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় পিচের অস্তিত্ব নেই। খানাখন্দে ভরা রাস্তা ধরেই যাতায়াত করছে বিভিন্ন শিল্প কারখানার ভারী পণ্যবাহী লরি। গাড়ি গেলেই ধুলোর ঝড় উঠছে। পথচারী বা মোটরবাইক আরোহীদের পক্ষে যাতায়াত দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা রয়েছে। |
খয়রাশোল গ্রামের সুব্রত সাঁই, তাপস চৌধুরীদের আক্ষেপ, “এই রাস্তায় নামা মানেই বিপদ ডেকে আনা। অথচ উপায়ও নেই।” তাঁদের অভিযোগ, ধুলোর কারণে বাসিন্দাদের অনেকের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। লরি ও গাড়ির চালকেরা জানিয়েছেন, ওই রাস্তায় যানবাহন নিয়ে গেলে যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। সময়ও অনেক বেশি লাগে। ফলে জ্বালানির খরচও বাড়ে। বিভিন্ন কারখানার আধিকারিকদের অভিযোগ, রাস্তা বেহাল হওয়ায় তাঁদের কাঁচামাল আনা ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহণ করতেও সমস্যা হচ্ছে। সময় ও খরচ বেশি পড়ছে। ধুলোর ঝড় থেকে বাঁচতে তাঁরাই মাঝে-মধ্যে রাস্তায় জল ছেটানোর ব্যবস্থা করেন বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, রাস্তার খানাখন্দ ভরাট করতে কোনও কোনও কারখানা থেকে বর্জ্য এনে ফেলা হয়। তাতে সাময়িক স্বস্তি মেলে ঠিকই। কিন্তু দিন কয়েক তার উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করলেই তা গুঁড়ো হয়ে যায়। চাকার চাপে সরে যায় রাস্তার দুই পাশে। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তার দু’পাশে জড়ো হওয়া সেই বর্জ্যের টুকরো ধুয়ে গিয়ে কাদায় ভরে যায় রাস্তা। মোটরবাইক চালিয়ে যাতায়াত কার্যত অসাধ্য হয়ে ওঠে। টানা বৃষ্টিতে জল জমে রাস্তাটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। একমাত্র রাস্তাটির আমুল সংস্কার সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে রাস্তাটি আমুল সংস্কার করা হয়েছিল। তখন সাধারণ যানবাহন চলাচল করত। পরে ওই এলাকায় বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় সহনক্ষমতার অতিরিক্ত ওজনের ভারী লরির যাতায়াত বেড়ে যায়। রাস্তা বসে যেতে থাকে। এখন মাঝে-মধ্যে সংস্কার করা হলেও দিন কয়েকের মধ্যেই রাস্তা ফের বেহাল হয়ে পড়ে। তবে পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। |