আমরি-কাণ্ড
শুধু কয়েক জনের বিরুদ্ধে কেন কড়া রাজ্য, প্রশ্ন কোর্টের
যে চার কর্তা প্রতি শনিবার বৈঠকে বসে হাসপাতালের নীতি নির্ধারণ করতেন, তাঁদের তিন জনই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁদের জামিনের ক্ষেত্রে সরকার তেমন বিরোধিতা করেনি। কিন্তু হাসপাতালের পরিচালন বোর্ডের অন্য সদস্যদের হেফাজতে রাখতে রাজ্য এত সক্রিয় কেন, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে সেই প্রশ্ন উঠল। প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি স্বয়ং।
এ দিন আমরির পরিচালন বোর্ডের দুই সদস্য রাধেশ্যাম গোয়েন্কা এবং প্রশান্ত গোয়েন্কার জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি হয় বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে (দুই বিচারপতির একই নাম)। বিচারপতি বলেন, পুলিশের নথি থেকে দেখা যাচ্ছে, প্রতি শনিবার আমরির চার সদস্যের (শ্রবণকুমার তোদি, মণি ছেত্রী, প্রণব দাশগুপ্ত এবং সত্যব্রত উপাধ্যায়) ম্যানেজিং কমিটি বৈঠকে বসে হাসপাতাল পরিচালনার নীতি ঠিক করত। চার জনের মধ্যে তোদি ছাড়া বাকিরা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান। বিচারপতি বলেন, ওই ৩ জনের জামিনের ক্ষেত্রে সরকার সে ভাবে বিরোধিতা করেনি। কিন্তু ওই হাসপাতালের ডিরেক্টর বোর্ডের সদস্যদের হেফাজতে রাখতে সরকার পক্ষ অত্যন্ত সক্রিয়। ওই সক্রিয়তা কেন, তখনই তা জানতে চান বিচারপতি।
এর পরেই সরকারি আইনজীবী (পিপি) দেবাশিস রায় জানান, যাঁরা জামিন পেয়েছেন, তাঁদের জামিন খারিজ করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানাবে রাজ্য (মণি ছেত্রী জামিন পেয়েছেন মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে, বাকি দু’জন জেলা দায়রা আদালতে)। এ দিন প্রায় একই সময়ে আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অন্য ৪ আমরি-কর্তার জামিনের আবেদনের শুনানি চলছিল। সেখানে সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য জানান, চিকিৎসক প্রণব দাশগুপ্ত এবং সত্যব্রত উপাধ্যায়ের জামিনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করবে রাজ্য। কিন্তু চিকিৎসক মণি ছেত্রীর বয়স ও উদ্বেগজনক শারীরিক পরিস্থিতি বিচার করে তাঁর ক্ষেত্রে এই আবেদন করা হবে না। হাইকোর্টে শুনানির সময় অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অতনু রায়চৌধুরী বলেন, এই মামলার চার্জশিটে সাড়ে চারশোর বেশি সাক্ষী রাখা হয়েছে। এতে স্পষ্ট, এই মামলা অত্যন্ত দীর্ঘ হবে। বিচার সম্পূর্ণ হওয়ার আগে কাউকে এত দিন আটক রাখা উচিত নয় বলেও মতপ্রকাশ করেন ওই আইনজীবী। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন শুনানি শেষ করে দেয়। তবে, এ দিন এই মামলার রায় হয়নি। রায় কবে, তা কয়েক দিনের মধ্যে জানানো হবে।
এ দিন আলিপুরে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অন্য চার আমরি-কর্তার জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে সব ধারায় মামলা হয়েছে, তা দায়রা আদালতের বিচার্য। তা ছাড়া, হাসপাতালের তিন ডিরেক্টর এখনও ফেরার। আদালতের নির্দেশ স্বত্তেও তাঁরা আত্মসমর্পণ করছেন না। উচ্চতর কোনও আদালতে তাঁদের তরফে জামিনের আবেদন করা হয়েছে কি না, তা-ও সরকারের অজানা। এর জেরে আমরি-মামলার বিচার শুরু করতে দেরি হচ্ছে।
জেল হেফাজতে থাকা আমরি-কর্তা শ্রবণ তোদি, দয়ানন্দ অগ্রবাল, সঞ্জীব পাল এবং সাজিদ হুসেনের জামিনের পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী আব্দুস সামাদ, সেলিম রহমান, শোয়েব হুসেনরা। আইনজীবী সেলিম বলেন, আমরি-মামলায় অসংখ্য সাক্ষী এবং অজস্র নথিপত্রের কারণে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সে দিক বিবেচনা করেই সত্যব্রত উপাধ্যায়কে জামিন দেয় জেলা ও দায়রা আদালত। তবে, মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত এ দিন জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়ে অভিযুক্তদের ২ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। আমরি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রশাসন) পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনই জেলা এবং দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন করেন। ২৮ মার্চ সেই আবেদনের শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.