পুলিশ জানে তিনি নির্দোষ, দাবি লক্ষ্মণের
ন্দীগ্রাম পুনর্দখলের ঘটনায় তিনি কোনও ভাবেই জড়িত নন বলে সিআইডি-র জেরায় দাবি করলেন তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। তাঁর পাল্টা দাবি, তদানীন্তন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সংঘর্ষের বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের ওই কর্তারা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল বলে দাবি তাঁর।
শনিবার দুপুরে মুম্বই থেকে লক্ষ্মণ শেঠ, অমিয় সাউ ও অশোক গুড়িয়াকে গ্রেফতার করার পর রবিবার রাতে তাঁদের ভবানী ভবনে নিয়ে আসে সিআইডি। তিন জনকে সিআইডি সোমবার হলদিয়া আদালতে হাজির করাতে পারে এই সম্ভাবনায় নন্দীগ্রাম-হলদিয়ার উৎসুক অনেকেই আদালতে ভিড় করেন। সিআইডি সূত্রে খবর, আজ, মঙ্গলবার হলদিয়া আদালতে তিন জনকে হাজির করা হবে। এ দিনই হলদিয়ার এসিজেএম আদালত চত্বরে নন্দীগ্রামের নিখোঁজদের পরিজনেরা আইনজীবীদের কাছে লক্ষ্মণবাবুদের পক্ষ না নেওয়ার আর্জি জানান।
সিআইডি’র অভিযোগ, নন্দীগ্রাম পুনর্দখলের পরিকল্পনায় লক্ষ্মণবাবু সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিলেন। সিআইডি’র দাবি, ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর তিনি খেজুড়ি থানার কলাগাছিয়ায় সিপিএম অফিসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন লক্ষ্মণের সঙ্গে ধৃত বাকি দুই সিপিএম নেতা অশোক গুড়িয়া এবং অমিয় সাউও। গাড়ির লগবুক যাচাই করে লক্ষ্মণবাবুর ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য মিলেছে বলে দাবি সিআইডি’র। ওই বৈঠকের পরেই ৮ এবং ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যদিও জেরায় লক্ষ্মণবাবুর দাবি, ২০০৬ সালের পর থেকেই ওই এলাকায় যাওয়া তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন।
কিছু দিন আগে পূর্ব-মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সত্যশঙ্কর পণ্ডা-সহ কয়েক জন পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দা কর্তারা। ডিআইজি-সিআইডি (অপারেশন) কারিয়াপ্পা জয়রামন বলেন, “সুনির্দিষ্ট তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিআইডি ৮৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে। প্রয়োজনে ঘটনার সময়ে থাকা পুলিশ অফিসারদের ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
নন্দীগ্রাম কাণ্ডে ‘নিখোঁজ’ ভগীরথ মাইতির স্ত্রী সুষমা, সত্যেন গোলের স্ত্রী দুর্গারানি, বলরাম সিংহের স্ত্রী কল্যাণী, আদিত্য বেরার স্ত্রী সোমা, সুবল মাজির স্ত্রী কৃষ্ণা ও নারায়ণ দাসের ছেলে শঙ্করেরা এ দিন হলদিয়া আদালত চত্বরে আসেন। তাঁরা আইজীবীদের লক্ষ্মণদের পক্ষ না নেওয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন, “লক্ষ্মণ শেঠই নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের প্রধান ষড়যন্ত্রী। ওঁর শাস্তি দরকার।”
এরই মধ্যে, লক্ষ্মণ শেঠের নাম জড়িত, হলদিয়ার এমন দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়। ‘হলদিয়া সার্ভিস সোসাইটি’ পরিচালিত দুর্গাচকের ‘বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সেন্টারে’ এ দিন বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি লক্ষ্মণবাবু। পড়ুয়াদের অভিযোগ, লক্ষ্মণবাবু ছাত্র-স্বার্থে কিছুই করেননি। ফি বাড়ানো হলেও ৮০ শতাংশ পড়ুয়া ‘ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ’য়ের সুযোগ পান না। লক্ষ্মণবাবুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আইকেয়ার’ পরিচালিত ‘হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র প্রায় ৭০ জন কর্মী-অধ্যাপকও এ দিন বর্ধিত মহার্ঘভাতার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। ‘বিক্ষুব্ধদের’ মধ্যে ১১ জন অধ্যাপক এবং এক কর্মীকে আবার শো কজ করেছেন কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সকাল থেকে জয়রামনের নেতৃত্বে গোয়েন্দাদের তিনটি দল দফায় দফায় লক্ষ্মণদের জেরা করে। তিন নেতার শারীরিক পরীক্ষাও করা হয়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ধৃতদের সঙ্গে এ দিন ছ’জন আইনজীবী দেখা করতে আসেন। সিআইডি সূত্রে খবর, আদালতে ধৃত তিন নেতার পুলিশ হেফাজতের আর্জি জানানো হবে। চার্জশিট জমা দেওয়ার পরেও তদন্তের স্বার্থে তিন নেতাকে আরও জেরার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন সিআইডি কর্তারা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.