বিশেষজ্ঞের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন
শিলচর মেডিক্যালে বন্ধ ক্যানসারের চিকিৎসা
দেড় বছর ধরে বন্ধ শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার চিকিৎসা। বিশেষজ্ঞের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কোবাল্ট সরবরাহ আটকে দিয়েছে বোর্ড অব রেডিয়েশন অ্যান্ড আইসোটোপ টেকনোলজি (ব্রাইট)। বহু লেখালেখির পরও বিষয়টির সমাধান না-হওয়ায় এখন আশা ছেড়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোবাল্টের জন্য পাঠানো টাকা ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছেন তাঁরা। ফলে হাসপাতালের কোবাল্ট টেলিথেরাপি ইউনিটটির চিরতরে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা।
২০০০ সালের ৫ মে ইউনিটটি চালু হয়। গড়ে প্রতিদিন ৭০ জন রোগী এখানে কোবাল্টের গামা রশ্মি গ্রহণ করতেন। বছরে চিকিৎসা হ’ত চার থেকে পাঁচশো রোগীর। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার মৃণালকান্তি দে জানান, দশ বছর মেয়াদের ইউনিট বলে ২০১০-র ফেব্রুয়ারিতে এখানে রেডিওথেরাপি বন্ধ করে দেওয়া হয়। নতুন করে কোবাল্ট সংগ্রহের মাধ্যমে ইউনিট চালুর জন্য লেখালেখি শুরু হয় এর আগে থেকেই। সরকার এ জন্য ৭৭ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে। বোর্ড অফ রেডিয়েশন অ্যান্ড আইসোটোপ (ব্রাইট)-কে ওই অর্থ পাঠানোর পরেই সমস্যার সূত্রপাত। অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি বোর্ড (এইআরবি) ব্রাইটকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোবাল্ট সরবরাহের অনুমোদন দেয়নি। প্রশ্ন তোলা হয়, মেডিক্যাল কলেজে যিনি ইউনিটটি চালাবেন, তাঁর কি রেডিওথেরাপির বিশেষ ডিগ্রি আছে? এর পরই আটকে যায় সব পরিকল্পনা।
সুপার মৃণালকান্তি দে নিজেই ইউনিটটি পরিচালনা করেন। তিনি পাশ করেছেন ১৯৮১ সালে। তখন কোর্সটি ছিল রেডিও-থেরাপি অ্যান্ড রেডিও-ডায়াগনোসিস। কোর্সে রেডিও থেরাপি ও রেডিও ডায়গনাসিস পৃথক করা হয় ১৯৮৫ সালে। কিন্তু এইআরবি-র বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক যে রেডিওথেরাপি করার যোগ্য তা বলতে হবে খোদ মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকে। বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করছে দেখে মেডিক্যাল কলেজ থেকে রাজ্যের মেডিক্যাল এডুকেশন ডিরেক্টরকে চিঠি পাঠানো হয়। ডিরেক্টর লিখেছেন মেডিক্যাল কাউন্সিলে। ওই চিঠির কোনও জবাব এখনও আসেনি। তাই হতাশ কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বার ব্রাইটের কাছ থেকে টাকা ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। এ জন্য রাজ্যের মেডিক্যাল এডুকেশন ডিরেক্টরের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক মৃণালবাবুর দাবি, এ নিয়্ জটিলতা হওয়ার কথা নয়। দশ বছর আগেও রেডিওথেরাপির বিশেষ ডিগ্রিধারী লোক মেলেনি। তাই শিলচর মেডিক্যাল কলেজের ইউনিটটিতে প্রথম দিন থেকেই রেডিওথেরাপি অ্যান্ড রেডিও ডায়াগনোসিস ডিগ্রি নিয়েই বিজন দে কাজ করে যান। বি বরুয়া ক্যানসার হাসপাতাল ছাড়া কোথাও এখনও পৃথক ডিগ্রিধারী নিযুক্ত হননি।
হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ শেখর চক্রবর্তী জানান, ইচ্ছে করলেও তাঁরা চট করে বিশেষ ডিগ্রিধারী কাউকে নিযুক্ত করতে পারছেন না। এ ছাড়া দুটি বিষয়কে পৃথক করা হয়েছে বলে তো আর আগের ডিগ্রি অকার্যকর হতে পারে না। তাঁর আক্ষেপ, মেডিক্যাল কাউন্সিল এ ব্যাপারে এইআরবি-কে স্পষ্ট নির্দেশ দিলে তাদের অনুমোদন জানাতে বা ব্রাইটের কোবাল্ট পাঠাতে সমস্যা হত না। ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা এখানে চিকিৎসা করাতে পারছেন না, নানা ভাবে তাঁদের পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। এটা সত্যই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.