|
|
|
|
|
|
অন্য কোথা, অন্য কোনও দেশে |
কম খরচের সাগরপাড়ি |
ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার বাইরেও কিছু দেশে উচ্চশিক্ষার বিশেষ সুবিধা আছে।
এমন তিনটি দেশে লেখাপড়া আর কাজের সুযোগ নিয়ে লিখছেন চন্দনা চন্দ্র |
আর্থিক মন্দার বাজারে বিদেশে পড়াশোনার কথা ভাবলে প্রথমেই মাথায় আসে খরচের চিন্তা। তার পর শিক্ষার মান, ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতা আর শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা। এত কাল ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকায় পড়তে যেতেই ভারতীয়দের ঝোঁক ছিল বেশি। তা এখনও রয়েছে। তবে, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক দেশেই এখন স্কলারশিপের সুযোগ কমেছে। শিক্ষার গুণগত মানের সঙ্গে কোনও রকম আপস না করেই তুলনামূলক ভাবে কম খরচে পড়ার সুযোগ রয়েছে জার্মানি, সিঙ্গাপুর ও ক্ষেত্রবিশেষে কানাডার মতো দেশগুলিতে। কোথায় পড়া যাবে, কোন কোন বিষয়ে নিয়ে পড়া যাবে, বৃত্তি বা অন্যান্য আর্থিক সুযোগ কী রয়েছে এই ধরনের বেশ কিছু তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হল এখানে। |
|
জার্মানি |
বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রচুর সুবিধা দেয় জার্মানি। ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে জার্মানিতে পাঠরত শিক্ষার্থীদের ১২ শতাংশই আন্তর্জাতিক। তুলনায় আমেরিকার মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩ শতাংশ বিদেশি। বিদেশি ছাত্রদের ভর্তির সুযোগ, নিরাপত্তা, পড়ানোর ব্যবস্থা, শিক্ষার উৎকর্ষ, বিশ্ব জুড়ে ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতা এই সব মাপকাঠির বিচারে জার্মানি এখন রয়েছে প্রথম স্থানে। সমীক্ষা অনুসারে গত কয়েক বছরে জার্মানির উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। জার্মানিতে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার সুযোগ আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। DAAD (জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস)-এর সাউথ এশিয়ার অধিকর্তা ক্রিস্টিয়ানে স্কটম্যান জানালেন যে, ‘২০১০-১১ সালে জার্মানিতে পাঠরত ভারতীয়দের সংখ্যা ছিল ৫,০৩৮ জন। ওই সেশনে নতুন ভর্তির সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি।’ জার্মান সরকার ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ব্লু কাডর্’ নামে নতুন ওয়ার্ক ও রেসিডেন্স পারমিট আনছে। এটা থাকলে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের রেসিডেন্স পারমিট পাওয়া আরও সহজ হয়ে যাবে। চাকরির ক্ষেত্রেও কোনও রকম বিধিনিষেধ থাকবে না।
|
কী পড়বে |
ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞানের গবেষণায় জার্মানি বিশ্বসেরার দলে। স্বাভাবিক ভাবেই গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সে দেশের জনপ্রিয় কোর্সগুলির তালিকায় সবার উপরে। ইঞ্জিনিয়ারিং -এর স্থান দ্বিতীয়। জার্মানিতে পাঠরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ৩৯ শতাংশ গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান আর ৩৪ শতাংশ ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে। ল, ইকনমিক্স, ম্যানেজমেন্ট ও সোশাল সায়েন্সের কিছু বিষয়, যেমন পাবলিক পলিসি, গভর্নেন্স প্রভৃতি কোর্সেরও চাহিদা বাড়ছে। ভারতীয়রা মূলত মাস্টার্স এবং পিএইচ ডি করতেই জার্মানি যায়।
|
আর্থিক সুবিধা |
আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি নির্ধারিত থাকে। এই ফি-র পরিমাণ সে দেশের শিক্ষার্থীদের ফি-র তুলনায় অনেকটাই বেশি। কিন্তু, জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দেশি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি একই। অসাধারণ শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপও দেয় জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। ‘DAAD প্রতি বছর ১৩০০ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ দেয়’, জানালেন ক্রিস্টিয়ানে। কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সেমেস্টারে ৫০০ ইউরো টিউশন ফি লাগে। কোথাও আবার টিউশন ফি নেওয়াই হয় না। তবে সাধারণ ভাবে ৫০-২৫০ ইউরো প্রতি সেমেস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিতেই হয় নানা ধরনের সার্ভিস বা সুযোগসুবিধার জন্য। জার্মানিতে থাকা-খাওয়ার মাসিক খরচ ৭৮০ ইউরো, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫০ হাজার টাকা। তবে, স্কলারশিপ জোগাড় করতে পারলে ন্যূনতম খরচেই সে দেশে উন্নত মানের উচ্চশিক্ষা পাওয়া সম্ভব। বিস্তারিত জানতে দেখে নাও ওয়েবসাইট www.funding-guide.de
|
কোথায় পড়বে |
জার্মানিতে দু’ধরনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১) বিশ্ববিদ্যালয় (টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি-সহ) ১০২টি, ২) ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস ১৭০টি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষণ আর গবেষণার কেন্দ্র। টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিগুলি বেসিক রিসার্চের ওপর বেশি জোর দেয়। অন্য দিকে, ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস-এ প্র্যাক্টিকাল ট্রেনিং-নির্ভর কোর্স করানো হয়। যেমন, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, বিভিন্ন সোশাল সায়েন্স ও ডিজাইন। ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে এদের ভাল যোগাযোগ থাকে। তবে এরা ডক্টরাল ডিগ্রি দেয় না। এখানে মাস্টার্স করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল স্টাডিজ করা যেতে পারে।
জার্মানির স্টিফারভারব্যান্ড এবং জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস (DAAD) যৌথ ভাবে প্রতি বছর সে দেশের বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অ্যাওয়ার্ড দেয়। ওয়াইমার-এর বাওহাস ইউনিভার্সিটি ২০১১ সালের বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। DAAD-এর মতে, জার্মানির অন্য পাঁচটি সেরা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় হল ব্রেমেন (http://www.uni-bremen.de/en/studies.html), ব্র্যান্ডেনবার্গ ইউনিভার্সিটি অব টেকনলজি কটবাস (http://www.tu-cottbus.de/btu/en.html), গটিনজেন (http://www.uni-goettingen.de/en/1.html) এবং সারল্যান্ড (http://www.uni-saarland.de/en/)। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটগুলিতে www.study-in.de/international-programmes; www.daad.de/idp; www.daad.de/ipp; www.higher-education-compass.de.
|
কানাডা |
কানাডার প্রতি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের একটা বড় কারণ হল, সে দেশে এক-দু’বছরের কোর্সের শেষে কাজের স্বল্প অভিজ্ঞতা থাকলেই পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির সুযোগ পাওয়া যায়। এ ছাড়া ওখানকার বহুজাতিক মিশ্র সংস্কৃতি সম্পন্ন একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিদেশিদের বাস করার পক্ষেও যথেষ্ট সহায়ক। রাষ্ট্রপুঞ্জের (ইউ এন ও) গত কয়েক বছরের সমীক্ষা অনুযায়ী বিদেশিদের বসবাসের জন্য কানাডা অন্যতম নিরাপদ দেশ। ভ্যানকুভারের নর্থ আইল্যান্ড কলেজ-এর ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মার্ক হেরিনজার জানালেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যখন আর্থিক মন্দায় ধুঁকছে, তখন কানাডার অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও বেশ শক্তপোক্ত, কারণ এ দেশের সরকার ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের ওপর কড়া লাগাম রেখেছে।’
|
কী ও কোথায় পড়বে |
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আন্তর্জাতিক মানের, শিক্ষার মানও উৎকৃষ্ট। তবে মূলত মাস্টার্স এবং পিএইচ ডি কোর্সের জন্যই এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন। কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছে থাকলে কমিউনিটি কলেজগুলিতে ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়া যেতে পারে। ভারতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর কানাডায় দু’-এক বছরের ভোকেশনাল ট্রেনিং নিলে চাকরির দরজা সহজেই খুলে যাবে। কানাডার কর্মমুখী কোর্সগুলি হল বিজনেস ও ফিনান্স (এম বি এ, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট), বায়োটেকনলজি, কম্পিউটার প্রোগ্রামস, ট্যুরিজম, হসপিটালিটি ও কিউলিনারি প্রোগ্রামস, ইন্টারঅ্যাক্টিভ মিডিয়া, ফার্মাসি টেকনিশিয়ান, এয়ারক্রাফট স্ট্রাকচার্স টেকনিশিয়ান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন টেকনিশিয়ান, মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনিশিয়ান প্রভৃতি। এখানে অনেক কমিউনিটি কলেজ রয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকটির নাম দেওয়া হল সেনেকা (http://www.senecac.on.ca/), সেন্টেনিয়াল (http://www.centennialcollege.ca/), হাম্বার (http://www.humber.ca/), নর্থ আইল্যান্ড কলেজ (http://www.nic.bc.ca/), নর্দার্ন কলেজ (http://www.northernc.on.ca/), জর্জিয়ান (http://www.georgianc.on.ca/)।
|
আর্থিক সুবিধা |
কানাডায় ব্যাচেলর্স ডিগ্রি ব্রিটেনের মতো তিন বছরের নয়, মাস্টার্স-ও এক বছরের কোর্স নয়। বরং আমেরিকার মতোই কানাডাতে আন্ডার গ্র্যাজুয়েশন চার বছরের আর মাস্টার্স দু’বছরের কোর্স। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া বেশ ব্যয়সাপেক্ষ, কারণ স্কলারশিপের সুযোগ কম ও তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। কেবল মাত্র উচ্চমেধার শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারে। যথেষ্ট আর্থিক সামর্থ্যও থাকা চাই। তুলনায় কমিউনিটি কলেজগুলিতে খরচ অনেক কম। বার্ষিক টিউশন ফি ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা। থাকা-খাওয়ার মাসিক খরচ ৭০০-৮০০ কানাডিয়ান ডলার। গড়ে ৩৫ হাজার টাকার মতো। কমিউনিটি কলেজগুলিতে ১ থেকে ৪ বছরের যে-কোনও ভোকেশনাল কোর্সে (সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা, ডিগ্রি) ভর্তি হওয়া যেতে পারে। ‘কমিউনিটি কলেজগুলির অধিকাংশ কোর্সই শিল্প-ভিত্তিক এবং শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। তাই পাশ করে কাজের সুযোগ ভালই’, জানালেন ক্যানাম সংস্থার সহ-সভাপতি গঙ্গা দোণ্ডপাণি।
|
সিঙ্গাপুর |
‘শিক্ষা খাতে সিঙ্গাপুর সরকারের বরাদ্দ অর্থ যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি। শিক্ষা ক্ষেত্রের পরিকাঠামো খুবই উন্নত, ক্ষেত্র বিশেষে পাশ্চাত্যের থেকেও। সে দেশের সরকার সিঙ্গাপুরকে এশিয়ার ‘এডুকেশনাল হাব’ হিসেবে তুলে ধরতে চায়। ভাল পরিকাঠামো, সক্রিয়তা, আয়ত্তের মধ্যে খরচ আর নিরাপত্তা সিঙ্গাপুরকে ভারতীয়দের কাছে পছন্দের গন্তব্য করে তুলেছে’, জানালেন সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল বিজনেস স্কুলের প্রাক্তন ডিন দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ম্যানেজমেন্ট ছাত্রদের হাতে কলমে কাজ শেখার প্রয়োজন হয়, যেটা তারা সেখানে ভালই পায়। সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট-এর কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ত্রিচা ভাতসা জানালেন, সিঙ্গাপুরের সরকারি এজেন্ডাতে নিরাপত্তার স্থান অনেক ওপরে। তাই আজও সিঙ্গাপুর অপরাধমুক্ত একটি দেশ। তা ছাড়া ভারত থেকে সিঙ্গাপুর উড়ানে মাত্র চার থেকে সাড়ে চার ঘন্টার দূরত্ব। তাই অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের এখানে পড়তে পাঠাতে অভিভাবকদের খুব একটা আপত্তি থাকে না। ইস্ট এশিয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট-এর ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর অধিকর্তা ডেভিড লি বললেন, ‘এশিয়ার মধ্যে সিঙ্গাপুরই প্রথম অর্থনৈতিক মন্দার প্রকোপ থেকে বেরোতে পেরেছে। ২০১১ সালের তৃতীয় ভাগে সেখানে বেকারত্বের হার ছিল মাত্র দুই শতাংশ’।
|
কী পড়বে ও কোথায় পড়বে |
সিঙ্গাপুরের পলিটেকনিকগুলিতে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করা যায়। ভর্তির জন্য দ্বাদশ স্তরে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর লাগে। উল্লেখযোগ্য পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানের নাম নানইয়াং, রিপাবলিক, সিঙ্গাপুর, টেমাসেক, নি আন পলিটেকনিক। আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর (http://www.nus.edu.sg/), নানইয়াং টেকনলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (http://www.ntu.edu.sg/Pages/default.aspx), সিঙ্গাপুর ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি (http://www.smu.edu.sg/), সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অব টেকনলজি অ্যান্ড ডিজাইন (http://www.sutd.edu.sg/)। প্রথম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল স্তরে ৯০ শতাংশ বা তার বেশি থাকা জরুরি। রয়েছে অনেক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। যেমন পি এস বি অ্যাকাডেমি, ইস্ট এশিয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট অব সিঙ্গাপুর, র্যাফেলস ডিজাইন ইনস্টিটিউট, সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, প্রভৃতি। সিঙ্গাপুরে অনেক বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের ক্যাম্পাস খুলেছে। যেমন ইনসেড, ডিউক ইউনিভার্সিটি, এসেক বিজনেস স্কুল, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো স্কুল অব বিজনেস। এদের সিঙ্গাপুর ক্যাম্পাসে পঠনপাঠনের মান ও ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতা মূল প্রতিষ্ঠানের সমতুল্য বলেই এরা দাবি করে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক স্তরে বেশ কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ও সিঙ্গাপুরের নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুগ্মভাবে কোর্স চালাচ্ছে। যেমন জনস হপকিনস, বাফেলো, স্ট্যানফোর্ড, কর্নেল, জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, জার্মান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলজি, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, আর এম আই টি প্রভৃতি। সিঙ্গাপুরে যে সমস্ত কোর্সের চাহিদা রয়েছে, সেগুলি হল এমবিএ, ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাকাউন্টিং, ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড ফিনান্স, কম্পিউটার সায়েন্স, হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম, ডিজাইন।
|
আর্থিক সুবিধা |
সিঙ্গাপুরে পড়ার খরচ পাশ্চাত্যের তুলনায় অনেকটা কম। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট-এর ক্যাম্পাসে আমেরিকার বাফলো ইউনিভার্সিটির ব্যাচেলর ডিগ্রি কোর্স করায়। আমেরিকায় এই কোর্সের সময়সীমা চার বছর। দীর্ঘমেয়াদী ছুটিগুলি বাতিল করে সিঙ্গাপুরে এই কোর্স তিন বছরে পড়ানো হয়। তাই খরচও কম। আমেরিকার তুলনায় সিঙ্গাপুরে বাফলো-র এই কোর্সে ৬০ শতাংশ খরচ কম লাগে। ক্ষেত্র বিশেষে ভারতের থেকেও। সে দেশে থাকা-খাওয়ার বার্ষিক খরচ তিন লক্ষ টাকা। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও পলিটেকনিকগুলিতে শর্তসাপেক্ষে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ টিউশন গ্রান্টের সুবিধা থাকে। শর্তটি হল কোর্সের শেষে সিঙ্গাপুরে রেজিস্টার্ড কোনও কোম্পানিতে তিন বছর কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়ার পর উচ্চশিক্ষায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে এই স্কলারশিপ। তবে যদি কেউ গ্র্যাজুয়েশনের পরে উচ্চশিক্ষা করতে চায় তা হলে তাকে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত স্কলারশিপের টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে শোধ করতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিও শিক্ষার্থীর মেধা, যোগ্যতা, প্রতিভা, আর্থিক অবস্থা প্রভৃতির ওপর নির্ভর করে নানা ধরনের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। বিস্তারিত জানতে দেখে নিতে হবে ওয়েবসাইট: www.singaporeedu.gov.sg |
|
|
|
|
|