|
|
|
|
শিলদা-মামলায় গ্রেফতার আরও এক স্কুলছাত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
শিলদায় ইএফআর শিবিরে মাওবাদী হামলায় জড়িত সন্দেহে আরও এক স্কুল পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বছর সতেরোর ওই তরুণ লালগড় রামকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির আবাসিক ছাত্র। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য স্কুল ছুটি থাকায় সে লালগড়ের ধরমপুর অঞ্চলের মোহনপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে এসেছিল। শনিবার সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার ধৃতকে মেদিনীপুর জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করানো হলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলারই একটি হোমে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
মেদিনীপুরের ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শুভেন্দু সামন্ত’র এজলাসে শিলদা মামলার বিচার-পর্ব চলছে। ইতিমধ্যেই চার্জগঠন হয়েছে। এ বার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। চার্জশিটে ২৯ জনকে মূল অভিযুক্ত করেছিল সিআইডি। এ ছাড়াও সম্পূর্ণ নাম-পরিচয় ছাড়া ৬৩ জন অভিযুক্তের একটি অতিরিক্ত তালিকা আদালতকে দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। সেই তালিকার ৩৪তম নাম, আর এই কিশোরের নাম এক। চার্জশিটে অবশ্য অভিযুক্তের পদবি, বয়স ও বাবার নামের উল্লেখ নেই। গ্রামের নাম রয়েছে লালগড়ের বৃন্দাবনপুর।
ধৃতের আইনজীবী তপন সিংহের দাবি, “চার্জশিটে উল্লিখিত পদবিবিহীন ব্যক্তি বৃন্দাবনপুরের বাসিন্দা। আর যাকে ধরা হয়েছে, সে মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রকৃত অভিযুক্তকে ধরতে না পেরে সিআইডি স্কুলপড়ুয়া এক নাবালককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসাচ্ছে।” যদিও সিআইডি-র দাবি, ইতিপূর্বে শিলদা-কাণ্ডে ধৃতদের জেরা করেই ওই তরুণের জড়িত থাকার কথা জানা গিয়েছে। শিলদা-কাণ্ডের সময় সে বাড়ির কাছের স্কুলে পড়ত।
পুলিশের দাবি, বছর তিনেক আগে জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের উদ্যোগে কিশোর-বাহিনী গড়ে উঠেছিল। ২০০৯ সালে লালগড়ের জঙ্গলে আত্মগোপন করে থাকার সময় শীর্ষ মাওবাদী নেতা কিষেণজিকে ঘিরে রাখত সশস্ত্র কিশোর-বাহিনীই। গত তিন বছরে জঙ্গলমহলে একাধিক খুন ও হামলা-নাশকতার ঘটনায় মাওবাদীদের কিশোর-বাহিনীর যুক্ত থাকার কথা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তবে, জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা এখন কোণঠাসা হওয়ায় কিশোর-বাহিনীর সদস্যরাও ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে গিয়েছে।
সিআইডি সূত্রের খবর, শেষ জনকে ধরে শিলদা-কাণ্ডে মোট ধৃতের সংখ্যা ১৯। এর মধ্যে দু’জন নাবালক-নাবালিকা। ধৃতের তালিকায় আরও দুই স্কুল পড়ুয়া রয়েছে। তবে, তারা কেউই দু’বছর আগে (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০) ঘটনার সময় নাবালক ছিল না। দু’জনেই এখন জেলবন্দি। গত মাসেও শিলদা-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে লালগড়ের রাউতাড়া থেকে ধরা পড়েন ১৯ বছরের পানমণি সরেন। ঘটনার সময় তিনি নাবালিকা ছিলেন প্রমাণ করতে পানমণির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হয়েছে। তাঁর শরীরের ৬টি এক্স-রে রিপোর্টে হাড়ের গঠন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের দেওয়া মত দেখে আদালত সিদ্ধান্ত নেয়, ঘটনার সময় পানমণি নাবালিকাই ছিলেন। সে জন্য তাঁকে মেদিনীপুরে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পাঠায় ঝাড়গ্রাম আদালত। শুরুতে বোর্ড তাঁকে হোমে রাখার নির্দেশ দেয়। গত শনিবার তিনি জামিনে ছাড়া পান। |
|
|
|
|
|