শুঁড় দিয়ে আছড়ানোর পরে পা দিয়ে দুই ব্যক্তিকে পিষে মারল ‘রেসিডেন্ট’ হাতি। রবিবার সকালের এই ঘটনায় কেশপুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মৃত দুই ব্যক্তির নাম শেখ আইনুদ্দিন (৪৪) ও ফুদন পাতর (৫৫)। মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও আশিস সামন্ত বলেন, “হাতির হামলায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি হাতি এখনও লোকালয়ে থেকে গিয়েছে। হাতি তাড়ানোর জন্য বনকর্মীরা গিয়েছেন। সাধারণ মানুষের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে।” |
কয়েকটি ‘রেসিডেন্ট’ হাতি আড়াবাড়ি রেঞ্জের জঙ্গলে অনেক দিন ধরেই রয়েছে। শনিবার রাতে তিনটি হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ে। তার মধ্যে একটি হস্তিনী, একটি মাঝারি বয়সের হাতি ও একটি দাঁতাল ছিল। কেশপুর, মুগবসান, দুড়া, রাধাবল্লভপুর, পিড়াশোল, জগন্নাথপুর প্রভৃতি এলাকায় হাতির দল ঘুরে বেড়াচ্ছিল। কখনও আলুর খেতে, আবার কখনও বাঁশ ঝোপে, কখনও বা কারও বাড়িতে হানা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। গ্রামে হাতি ঢুকেছে খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাশাপাশি এলাকার বহু মানুষ এক জায়গায় জড়ো হয়ে যান। হাতিগুলিকে তাড়িয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। জগন্নাথপুরের শেখ আইনুদ্দিন হাতি তাড়ানোর জন্য পিড়াশোলে গিয়েছিলেন। একটি হাতি আইনুদ্দিনকে শুঁড়ে তুলে বেশ কিছুটা নিয়ে গিয়ে আছাড় মারে। তারপর পা দিয়ে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় আইনুদ্দিনের।
এ দিকে, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে তিনটি হাতি দু’দলে ভাগ হয়ে যায়। এক দিকে চলে যায় দাঁতালটি। অন্য দিকে বাকি দু’টি হাতি। ওই দু’টি হাতিকে আড়াবাড়ির দিকে পাঠানোর চেষ্টা করে বন দফতর, পুলিশ ও স্থানীয় মানুষ। আড়াবাড়ির জঙ্গলে ঢোকার আগেই বেলা-মহারাজপুর গ্রামের প্রৌঢ় ফুদন পাতরকে আছড়ে, পা দিয়ে পিষে মারে একটি হাতি। অবশেষে বহু কষ্টে জঙ্গলে ঢোকানো সম্ভব হয় ওই দু’টি হাতিকে। অবশ্য একটি হাতি এখনও পিড়াশোল-জগন্নাথপুর এলাকায় থেকে গিয়েছে। বনকর্মীরাও সেখানে রয়েছেন। বন দফতর জানিয়েছে, হাতির আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে, চারদিক থেকে মানুষ দল বেধে হাতি তাড়াতে চলে এসেছে। এত মানুষের ভিড়ে জঙ্গলে ঢুকতে বাধা পাচ্ছে হাতিটি। তাই এলাকাবাসীর কাছে হাতিটিকে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। |