|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু ... |
বই পড়া না টিভি দেখা |
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘আমি বলতে গেলে গ্রন্থাগারেরই সন্তান’ (২২-২) পড়ে কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোকপাত করা দরকার বলে মনে হল। গ্রন্থাগার সম্পর্কে সুনীলবাবুর লেখাটি পড়ে নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। যে দিন থেকে বোকাবাক্স মানে টেলিভিশন দেখা মানুষ শুরু করেছে, সে দিন থেকেই আস্তে আস্তে বইয়ের থেকে মানুষ দূরে চলে যেতে শুরু করেছে।
এখন সন্ধেবেলা পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের বাড়ি যেতে ভয় করে, পাছে তাঁদের টিভি সিরিয়াল দেখায় ব্যাঘাত ঘটে। সন্ধেবেলা টিভি ছেড়ে গ্রন্থাগারে যাওয়ার কথা ভাবা আর দিবাস্বপ্ন দেখা বোধহয় একই। এর ফলে, পাড়ার গ্রন্থাগার থেকে শুরু করে জেলা স্তরের গ্রন্থাগার সর্বত্র খাঁ-খাঁ করছে। তবে যে সব গ্রন্থাগারে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বই বা পত্রপত্রিকা রাখা হয়, সেখানে অবশ্য পড়ুয়াদের ভিড় কিছুটা চোখে পড়ে। সত্যি কথা বলতে কী, মানুষ এখন প্রতিদিনের খবরের কাগজটাই খুঁটিয়ে পড়ে না। সাধারণ মানুষের মধ্যে পড়ার অভ্যাস উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে আসার অন্যতম কারণ হল, মানুষকে এখন নানা রকম টেনশন নিয়ে দিন কাটাতে হয়। এই চাপ থেকে সাময়িক মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ টিভিকেই বেছে নিয়েছে বিনোদনের অন্যতম উপাদান হিসাবে।
আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সদস্য। পাঠ্য বই ছাড়াও সুপ্রাচীন এই গ্রন্থাগারের গল্পের বইয়ের সংখ্যা ও বৈচিত্র রীতিমত প্রশংসনীয়। অথচ সারা বছরে খুব অল্পসংখ্যক গল্পের বই-ই এই গ্রন্থাগার থেকে ইস্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের গল্পের বই পড়ার অনীহাই এর অন্যতম কারণ। পক্ষান্তরে ফি-বছর কলকাতা বইমেলায় মানুষের ভিড় দেখে অবাক হই। তবে এ কথা আমরা অনেকেই জানি যে কলকাতা বইমেলায় বইয়ের স্টলের চেয়ে খাবারের দোকানের ভিড়টাই বেশি হয়। |
|
সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রন্থাগারের প্রতি আকর্ষণ আগামী দিনে আরও কমবে ছাড়া বাড়বে না। জীবনযাত্রার প্রকৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি আর অত্যধিক টেলিভিশনমুখিতা এর অন্যতম কারণ। বিভূতিভূষণের ‘চাঁদের পাহাড়’ কিংবা গোপাল ভাঁড়ের গল্প পড়তে পড়তে আমরা ছোটবেলায় মনের মধ্যে নানা ছবি আঁকতাম। কল্পনা করতাম কত কিছু। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা গোপাল ভাঁড়কে সিডি-র মাধ্যমে বা টিভি-র পর্দায় দেখে নিচ্ছে। কল্পনা করার কষ্টটুকু বা আনন্দটুকু তারা পাচ্ছে না। এখনকার বাবা-মায়েরা সন্তানদের কম্পিউটারে গেম বা টিভি-তে কার্টুন দেখাকে মেনে নিয়েছেন। তাই তাঁরা প্রতি বছর বইমেলায় যান ঘুরতে, খেতে আর ইচ্ছা হলে সামান্য কিছু বই কিনতে যা বুকশেলফে সাজিয়ে ঘরের শোভাবর্ধন করা যাবে। গ্রন্থাগারগুলি অস্তিত্বের সংকটে পড়বে এতে আর আশ্চর্যের কী আছে! |
সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। সালকিয়া, হাওড়া-৬
|
আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস |
মগজ মিটার বিভাগে (রবিবাসরীয় আনন্দমেলা, ১৯-২) লেখা হয়েছিল ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিল ২০০০ সালে। সালটি ২০০০ নয়, ১৯৯৯ হবে।
|
‘সইফ’= তরবারি! |
সইফ আলি খান আনন্দবাজার পত্রিকায় কেন ‘স্যাফ আলি খান’ হয়ে যান, বুঝতে পারছি না। ২৩-২ প্রথম পৃষ্ঠায় এবং ২৪-২ পঞ্চম পৃষ্ঠায় এমনটা চোখে বিঁধেছিল। আবার ২৬-২ রবিবাসরীয় ‘চিরকুট’ কলমে ‘স্যাফ আলি খান’ দেখে অগত্যা এই চিঠি।
আরবি শব্দ ‘সইফ’ অর্থ তরবারি। F Steingass-এর ‘English-Arabic Dictionary’ এবং Thomas Patrick Hughes-এর ‘ডিকশনারি অফ ইসলাম’ খুললেই ব্যাপারটি স্পষ্ট হবে এবং আমার বক্তব্যটিও ভিত্তি পাবে বলে আশা করি। বাংলা উচ্চারণ রীতিতে ‘সইফ’ শব্দটির উচ্চারণ সোইফ্। তাই সইফ-উদ্-দীন নামের বর্তমান এক রাজনীতিকের নাম ‘সৈফুদ্দিন’ লেখা হয়। আমার বাল্যে এক খ্যাতনামা কংগ্রেস নেতার নাম ছিল সৈফুদ্দিন কিচ্লু। অর্থাৎ এ ভাবেই লেখা হত। ‘ডিকশনারি অফ ইসলাম’-এ দেখা যাবে, হজরত মুহাম্মদ তাঁর এক সেনাধ্যক্ষ খালিদ-ইব্ন্-আল্-ওয়ালিদ্কে ‘সইফুল্লাহ’ (সোর্ড অব গড) নামে ভূষিত করেছিলেন। বাংলায় বোঝাতে নামটা লেখা হবে সইফ্-উল্-লাহ্। এর হুবহু ইংরেজি রূপ ‘সোর্ড অফ গড’।
পটৌডির নবাব এবং অভিনেতা তাঁর প্রখ্যাত পিতা ক্রিকেট খেলোয়াড় মনসুর আলি খানের ধাঁচে হয়েছেন ‘সইফ আলি খান’। তাঁর বোনও একই ধাঁচে ‘সোহা আলি খান’। ‘সোহা’-ও আরবি শব্দ এবং এর অর্থ ‘নক্ষত্র’ হলেও নির্দিষ্ট ভাবে ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যায় উল্লেখ্য অগস্ত্য নক্ষত্রকে চিহ্নিত করে। |
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ। কলকাতা-১৪ |
|
|
|
|
|