দক্ষিণ দিনাজপুরে কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল চরমে উঠেছে। রায়গঞ্জের সাংসদ দীপা দাশমুন্সিকে হেনস্থার চেষ্টা-সহ গোলমালের চেষ্টার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়-সহ পাঁচ কংগ্রেস নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে হরিরামপুর থানায় ওই অভিযোগ করেছেন বহিষ্কৃত জেলা কংগ্রেস সহ-সভাপতি শুভাশিস পাল। পাশাপাশি, মঙ্গলবার পুলিশের কাছে শুভাশিসবাবুর বিরুদ্ধে জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি-সহ এক কর্মীকে অপহরণের অভিযোগ করেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জনবাবু। পুলিশ জানাচ্ছে, শুভাশিসবাবু জেলা কংগ্রেস সভাপতি, প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য কেশব যোশি, যুব কংগ্রেস সভাপতি অসীম রায়, জেলা নেতা মিনজুর রহমান এবং কংগ্রেস কর্মী আজহার রহমানের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন। উল্টোদিকে, নীলাঞ্জনবাবু সোনা পালের বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেস সভাপতি অসীমবাবু এবং কংগ্রেস কর্মী আজহার রহমানকে অপহরণের অভিযোগ করেছেন। গত সোমবার হরিরামপুরে একটি দলীয় সভার আগে গোলমালের জেরেই গোষ্ঠী কোন্দল দেখা দিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “দুই পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জনবাবুর অভিযোগ, “গত সোমবার হরিরামপুরে ব্লকে বহিষ্কৃত শুভাশিস পালের সমর্থনে সভা করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন সাংসদ। সাংসদকে হেনস্থার অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে কলেজ ভোটের প্রচারে হরিরামপুরে ছিলেন। তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।” শুভাশিসবাবুর পাল্টা দাবি, “দীপা দাশমুন্সির সভার আগে জেলা সভাপতি নীলাঞ্জনবাবু নেতৃত্বে পাটনের বাঁশ ঝাড়ের জঙ্গলে হামলার জন্য তাঁর অনুগতরা জমা হয়। দীপাদেবীকে কালো পতাকা দেখানোর জন্যও পাটনের রাস্তায় বেশ কিছু কংগ্রেস সমর্থক ছিলেন। সব কিছু পুলিশকে জানানো হয়েছে। বেকাদায় পড়ে পাল্টা মিথ্যা মামলা করেছেন জেলা সভাপতি।” জেলা কংগ্রেস নেতারা জানাচ্ছেন, ওই দিন দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এরপর শুভাশিসবাবু অনুগামীরা জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি অসীম রায় সহ দু’জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সকলের অবশ্য থানা থেকেই এদিন ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।কংগ্রেস সূত্রের খবর, দল বিরোধী কাজের অভিযোগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জেলার সহ সভাপতি শুভাশিসবাবু ওরফে সোনা পালকে জেলা কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হয়। জেলার পর্যবেক্ষক তথা কংগ্রেস বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেন। এর পরেই গত সোমবার শুভাশিসবাবু হরিরামপুরে সভার ডাক দেন। সেখানে বহিষ্কারের তীব্র বিরোধিতা করেন সাংসদ দীপাদেবী। এদিন সাংসদ দীপাদেবী বলেন, “সোনা পাল কংগ্রেসেই আছেন। তাঁকে বহিষ্কারের সঠিক পদ্ধতি মানেনি জেলা নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করছি। শুনেছি পাটন এলাকার বাঁশ বাগানে কিছু দলের লোক জড়ো হয়েছিলেন।” |