খুন হওয়ার দিন ভোরে টানা দু’ঘন্টা তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলেছেন আশিস দত্ত (২৮)। ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশের হাতে। নিহতের মোবাইলের কল রেকর্ড থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, খালপাড়ার চালের আড়ত থেকে টাকা নিয়ে পালানোর আগের দু’দিনে ৪০ বার তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলেছেন আশিস। তিনি ওই টাকা হাতানোর পর আলিপুরদুয়ারে গিয়ে প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর ছক কষেছিলেন। সোমবার পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর ওই খুনের ঘটনায় ধৃত জাকির আলি, তাহেরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী অফিসাররা। মঙ্গলবার দুপুরে ভক্তিনগর থানার জটিয়াকালী গিয়ে জাকিরের বাড়ি থেকে আরও ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। এই নিয়ে ৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। বাকি আরও ২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার খোঁজ বের করতে পারেনি পুলিশ। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ঘটনার তদন্ত করছে। পুরো টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ওই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার জন্য খালপাড়ার চালের আড়ত থেকে সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা নিয়ে বের হওয়ার পর ওই তিন দুষ্কৃতীর সঙ্গে চম্পট দেয় আশিস। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আলিপুরদুয়ারে গিয়ে টাকার ভাগ করার পর তাঁর প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যেত আশিস। সে পথেই তারা যাচ্ছিল। ভুটকির কাছে বেলা ১২টার মধ্যে আশিসকে ওই ৩ জন খুন করে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে তাঁদের কাছে থাকা ছয়টি মোবাইল ফোন ‘সুইচ অফ’ করে দেওয়া হয়। এর পরে তাহেরুল গাড়ি থেকে নেমে তার মোটরবাইক নিয়ে গিয়ে মারুতি ভ্যানটিকে রাস্তা দেখানোর কাজ করে। রাতে তারা জটিয়াকালীতে গিয়ে আশিসের দেহ মাটির নিচে পুঁতে দেয় বলে অভিযোগ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে জাকির ও তাহেরুলকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরে মূল ঘটনা জানতে পারে পুলিশ। পরে রফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ওই তিন জন পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল। আশিসকে ফুলবাড়ি ক্যানালে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। পুলিশ ক্যানালের ধারে দুষ্কৃতীদের নিয়ে গিয়ে জেরা করে। পরে তারা পুলিশকে ঠিক তথ্য জানায়। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “জেরায় আরও তথ্য মিলবে।” |