ধৃতের পাশে দাঁড়ানোয় বিবাদ দলেই
‘তোলা আদায়ে’র মামলার অভিযোগে ধৃত তৃণমূল নেতা অমল মুখোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ানো হবে কি না তা নিয়ে দলের মধ্যেই দ্বন্দ দেখা দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ আইন মেনে ব্যবস্থা নেবে। তবে দলেরই একাংশ ওই তৃণমূল নেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা ধৃতকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। বর্তমানে অমলবাবু উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন। সেখানে তাঁকে দেখতে যান ৪ নম্বর বোরো কমিটির চেয়ারম্যান সমীরণ সূত্রধরও এবং মিলনপল্লির ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ সীমা সাহাও। এদিন ধৃত তৃণমূল নেতা দাবি করেন, দলের রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের অনুরোধেই তিনি মঞ্জু শর্মার বাড়িতে গিয়েছিলেন। এই ব্যাপারে ধৃত তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠরা রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়কের অমলবাবুকে লেখা একটি চিঠির কপিও সংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দেন। রবিবার রাতে শহরের মিলনপল্লি এলাকায় বধূ নির্যাতনের মামলায় অভিযুক্তের কাছে টাকা দাবি করে চড়াও হওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন ওই তৃণমূল নেতা অমল মুখোপাধ্যায় ও তাঁর ছেলে। অমলবাবু বলেন, “দলেরই এক বিধায়কের অনুরোধেই টুকটুকিদেবীর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। মঞ্জুদেবীর পরিবারের কাছে টুকটুকি দেবী তাঁর দেওয়া নগদ টাকা এবং গয়না ফেরত চেয়েছিলেন। মঞ্জুদেবীকে সেটাই বলতে গিয়েছিলাম।” এদিন যোগাযোগ করা হলে খগেশ্বরবাবু অবশ্য ওই চিঠির কথা অস্বীকার করেন। এমনকী, অমল মুখোপাধ্যায়কে তিনি চেনেন না বলেও দাবি করেন। রাজগঞ্জের বিধায়ক বলেন, “আমি যাঁকে চিনি না তাঁকে চিঠি লিখতে যাব কেন? আমার এমন কোনও চিঠির কথা মনে পড়ছে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” তবে অমলবাবুর স্ত্রী স্মৃতিমা মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রাজগঞ্জের বিধায়কের লেখা চিঠি তাঁর কাছেই রয়েছে। তিনি বলেন, “আমার স্বামীর বয়স ৭২ বছর। উনি কেন এসব গোলমালে যাবেন? দলের বিধায়কের কথা উনি মিটমাট করতে গিয়েছিলেন। অহেতুক আমার স্বামীকে হেনস্থার মধ্যে ফেলা হল।” তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের নাম ভাঙিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। যেমন খালপাড়া এলাকাতেই এক তৃণমূল নেতা বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচির নাম করে প্রায় প্রতিদিনই টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ। জমির দালালি, গরু পাচারের ব্যবসা থেকেও দলের কয়েকজনের নাম জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য এই ধরনের ঘটনায় তাঁদের দলের কারও জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “দলের কেউ এ ধরনের ঘটনায় জড়িত বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী দলের কর্মীদের স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনাকে কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। তবে অমলবাবু দোষী কি না সেটা তো এখনও প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ তদন্ত করছে। দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এদিকে, শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সোমবার আদালত থেকে অমলবাবুকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও ইসিজি পরীক্ষায় খারাপ কিছু মেলেনি বলে চিকিৎসেকরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার শরীর ফের তিনি শরীর খারাপ বোধ করলে ৩ ঘন্টা অক্সিজেন দিতে হয়। এ দিন সন্ধ্যায় তাঁর স্বাম কংগ্রেস নেতা যতন সাহাও খোঁজ নেন। যতনবাবু বলেন, ‘‘এক বিধায়কের অনুরোধেই মঞ্জুদেবীর ছেলের পরিবারের সমস্যা মেটাতে অমলবাবু গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। তিনি অসুস্থ জেনে দেখা করতে গিয়েছিলাম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.