ভূমিকম্পে ফাটল ধরেছিল শিলিগুড়ির মহাবীরস্থান রেলগেটের উড়ালপুলে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ সেই ফাটল থেকেই খসে পড়ল একটি বড় চাঙড়। ঠিক রিকশায় শিশুপুত্রকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। চাঙড়টি পড়ে প্রায় রিকশার গা-ঘেঁষে। ওই ঘটনার পরে পুলিশ গিয়ে রেলিং দিয়ে জায়গাটি ঘিরে দেয়। এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, উড়ালপুলের মহাবীরস্থান রেল লাইনের ঠিক উপরে ফুট দুয়েকের একটি অংশের চাঙড় মঙ্গলবার সকালে খসে পড়ে। তার বাইরেও ৪ ফুট অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রেল ও শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ফাটল দেখে তা সারাতে উদ্যোগী না-হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। এমনকী ভূমিকম্পের পর সেতু পরিদর্শন করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য গাফিলতির কথা স্বীকার করে বলেন, “ভূমিকম্পের পরে সমস্ত জায়গায় গিয়েছি। পরিদর্শন করেছি। বহু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উড়ালপুলের ওই অংশে যে ফাটল তৈরি হয়েছিল তা কেউ জানায়নি। ফলে সেখানে যাওয়া হয়নি। এটা আমাদের গাফিলতি। ঘটনার কথা শুনে বাস্তুকারদের সেখানে পাঠিয়েছি। দ্রুত মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বিষয়টি নিয়ে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “দুভার্গ্যজনক ঘটনা। এসজেডিএ’কে তদন্ত করতে বলব। যাদের আমলে সেতুটি তৈরি হয়েছে তাদের জবাব দেওয়া উচিত।” |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অভিযোগ, উড়ালপুল তৈরির সময় ‘কাট মানি’র ব্যাপার ছিল বলে ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে। বাম আমলে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এসজেডিএ চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, “সেতুটির একটি অংশ এসজেডিএ তৈরি করেছে। আরেকটি অংশ রেলের তরফে তৈরি করা হয়েছে। রেলের তৈরি করা অংশের থেকে একটি জায়গা থেকে পাথরের চাঙর খসে পড়েছে। সেটাও মূল অংশ নয়। খুব বড় কিছু হয়নি বলেই শুনেছি। তার পরেই ওই ঘটনা নিয়ে অনেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। আমিও রেলমন্ত্রীকে দায়ী করতে পারতাম। তা করিনি। কোনও দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তির দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা উচিত নয়।” পাশাপাশি, তাঁর কটাক্ষ, ‘কাটমানি’ শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নই। যিনি ওই ধরনের কাজ করেন, তিনিই ওই শব্দের সঙ্গে বেশি পরিচিত হওয়া স্বাভাবিক।” এ দিন ঘটনার পরে সেখানে যান এসজেডিএ’র প্রধান বাস্তুকার অরবিন্দ ঘোষ। তিনি জানান, উড়াল পুলের অংশটি রেলের তৈরি। রেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁর কথায়, “ভয়ের কিছু নেই। মূল অংশের ক্ষতি হয়নি। অতিরিক্ত অংশ থেকে পাথরের চাঙড় খসে পড়ে। দ্রুত মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হবে।” এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার বলেন, “আমরা সেতু খতিয়ে দেখেছি, ভয়ের কিছু নেই। এদিনই সংস্কারে হাত দেওয়া হয়েছে। |