আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। পুরুলিয়াতে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে বাংলা ভাষার লড়াইয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু কোথাও মানভূমের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস উত্থাপিত না হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
লোক গবেষক তথা মানভূম কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রধান প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “বাংলা ভাগ হওয়ার সময় অবধি মানভূম জেলা বাংলার মধ্যে ছিল। পরে বাংলাভাষী সমস্ত জেলা বাংলায় এলেও মানভূম জেলা বিহারেই থেকে যায়। মানভূমকে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে তখন থেকেই আন্দোলন চলছে।” স্বাধীনতা সংগ্রামী মাঝিহিড়া আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা চিত্তভূষণ দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের দাবি পূরণে ১৯৪৮ সালে লোকসেবক সঙ্ঘ গঠন করি। সঙ্ঘের নেতৃত্বে সমগ্র জেলা জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এ কারণে মানভূম জেলাকে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন চালাতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে।” প্রদীপবাবুর দাবি, “বাংলা ভাষার আন্দোলনে যুক্ত ব্যাক্তিদের নামে মিথ্যা মামলাও করা হয়েছিল। বাংলাভাষী স্কুলের অনুমোদন কেড়ে নেওয়া, শিক্ষক না মেলা ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে ওই আন্দোলনকে দমানোর চেষ্টা হয়েছিল। দাবির সমথর্র্নে ১৯৫৬ সালে পুঞ্চা থেকে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা হয়েছিল। শেষে ১৯৫৬ সালে ১ নভেম্বর মানভূম জেলার খণ্ডিত অংশ পুরুলিয়া নামে নতুন জেলা পশ্চিমবঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হয়।” তাঁর ক্ষোভ, “কিন্তু এ দিন জেলার কোথাও সে ভাবে মানভূম ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস উত্থাপিত হয়নি।” লোকসেবক সঙ্ঘের সচিব সুশীল মাহাতোর দাবি, “মানভূমের আন্দোলনের কথা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে যুক্ত না হলে ওই ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।” |