অবরোধ আর বন্ধে ব্যাহত বাঁকুড়ার একাংশ
রাস্তা অবরোধ আর বন্ধের গেরোয় মঙ্গলবার নাকাল হলেন বাঁকুড়া জেলার একাংশের বাসিন্দা। দক্ষিণ বাঁকুড়ার বির্স্তীণ এলাকার জনজীবন ব্যাহত হল। চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হলেন রাস্তায় বের হওয়া গাড়ির চালক থেকে পথচারী সকলেই।
অলচিকি হরফে সাঁওতালি ভাষায় চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবিতে এ দিন বাঁকুড়া জেলার ৬টি স্থানে রাস্তা অবরোধ করেছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ সাঁওতালি শিক্ষা অধিকার রক্ষা মঞ্চ’। বাঁকুড়া সদর থানার ধলডাঙা মোড়, পোয়াবাগান, হেভির মোড়, ছাতনা, কমলপুর এবং সারেঙ্গা থানার বাগজাদা মোড়ে এই অবরোধ হয়। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে অবরোধ। পরে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ধলডাঙা মোড়ে গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। অবরোধকারীদের তিনি জানান, অলচিকি হরফে পড়াশোনা করার জন্য পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির নির্দেশ এসেছে। তিনি অবরোধ তোলার অনুরোধ জানান। এরপরে অবরোধ ওঠে।
অবরোধে আটকে থাকা গাড়ির লাইন। ছবি: উমাকান্ত ধর।
এ দিকে, টানা ৬ ঘণ্টা ধরে এই অবরোধের জেরে বাঁকুড়া-খাতড়া, বাঁকুড়া-বর্ধমান, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া, বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ব্যাহত হয় যান চলাচল। রাস্তায় সারি সারি গাড়ি আটকে যায়। সাধারণ মানুষ প্রচণ্ড অসুবিধার মুখে পড়েন।
পশ্চিমবঙ্গ সাঁওতালি শিক্ষার অধিকার রক্ষা মঞ্চ-র সহ-সভাপতি বৈদ্যনাথ হাঁসদাও অবরোধের জন্য সাধারণ মানুষের নাজেহাল হওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “অলচিকি হরফে এ বছর প্রায় দু’হাজার পড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি। ওই পড়ুয়াদের স্বার্থেই এ দিন অবরোধ করা হল। কিছু মানুষের অসুবিধা হয়েছে। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে আমরা এটা করতে বাধ্য হয়েছি।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বলেন, “জেলার ১৬টি হাইস্কুলে অলচিকি হরফে পড়ানোর নির্দেশ এ দিনই শিক্ষা দফতর পাঠিয়েছে। এ জন্য ওই স্কুলগুলি পিছু তিন জন করে অলচিকি হরফে পড়ানোর উপযোগী শিক্ষক নেওয়া হবে। এ ছাড়া চুক্তির ভিত্তিতে দু’জন করে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নেওয়া হবে। শীঘ্রই স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হবে।”
অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির রাজ্য সভাপতি অভিরাম বেসরার অপমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা অভিযোগ তুলে এ দিনই ২৪ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিয়েছিল তাঁর দল। ৩০ জানুয়ারি সাঁতুড়ির কাপাসডাঙায় বাড়ির কাছে মাঠে অভিরামবাবুকে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বন্ধের প্রভাব পড়ে রানিবাঁধ ও সারেঙ্গার কিছু এলাকায়। ওই এলাকায় দোকান-বাজার খোলেনি। বাস-সহ ছোট গাড়ি চলাচলও এ দিন বন্ধ ছিল। দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিভিন্ন রুট থেকে সোমবার তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর জনসভার জন্য বেশ কিছু বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। এ দিন অবরোধ আর বন্ধের জেরে দীর্ঘক্ষণ বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরপর দু’দিন ভোগান্তি হল। রানিবাঁধের মতিলাল সর্দার, রোহিত সর্দারদের ক্ষোভ, “বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি থাকা এক আত্মীয়কে দেখতে বেরিয়েছিলাম। গাড়ি না চলায় আমরা যেতে পারলাম না। মাঝ রাস্তায় আটকে পড়ি।” খাতড়া শহরে অবশ্য বন্ধের প্রভাব পড়েনি। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শহরও স্বাভাবিক ছিল। মহকুমা শাসক (খাতড়া) দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, “বন্ধের কোনও প্রভাব পড়েনি। অফিসগুলিতে কর্মী হাজিরা স্বাভাবিক ছিল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.