ছাত্র সংঘর্ষের জেরে ক্লাস বন্ধ কলেজে
ছাত্র পরিষদের সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এবং একই সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল অশোকনগর নেতাজি শতবার্ষিকী মহা বিদ্যালয়। দু’পক্ষই পরস্পরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে গোলমালকারীদের হটিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার এই কলেজে এই ঘটনায় আহত হয়েছেন চারজন। এঁদের মধ্যে এক জন ছাত্র পরিষদের ও তিনজন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক। ঘটনার জেরে এ দিন কলেজে ব্যাহত হয় পঠনপাঠন। আতঙ্কিত ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস না করেই বাড়ি ফিরে যান। উত্তেজনা থাকায় কলেজের পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। অধ্যক্ষ সুধানাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগামী ৫ মার্চ কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করাই সমস্যা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারিও কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে জখম হন ৪ জন। ভাঙচুর চালানো হয় অধ্যক্ষের ঘরে। এমনকী তাঁকে ‘হুমকি’ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অধ্যক্ষ। আহত চার ছাত্রের মধ্যে তিনজনকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ সংগঠনের ইউনিট সভাপতি ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দেলোয়ার হোসেন কলেজের ঢোকার সময় তাঁকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজন সমর্থক মারধর করে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। দেলোয়ার বলেন, “আমাকে মারধরের সময় ওরা বলছিল, ‘তোদের সঙ্গে আমাদের কোনও জোট নেই। তাই কলেজে ঢুকবি না’।” ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি প্রবীর মজুমদার বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে প্রায়ই কলেজে গোলমাল হচ্ছে। পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে। এ দিন আমাদের দলের কর্মীকেও মারধর করা হল। আসলে ওরা চাইছে, অন্য কোনও সংগঠন যাতে কলেজে না থাকে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।” যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সঞ্জয় রাহা বলেন, “সত্যিই যদি ছাত্র পরিষদের কাউকে মারধর করা হয়ে থাকে তবে তা অন্যায় হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই।”
অন্যদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশের দাবি এ দিন বহিরাগত কিছু যুবক তাঁদের সংগঠনের দুই সদস্য সুশান্ত দে ও কুনালজিৎ সরকারকে ব্যাপক মারধর করে। সুশান্ত তৃতীয় বর্ষের এবং কুনালজিৎ দ্বিতীয় বষের্র ছাত্র। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি গোষ্ঠীর সদস্য জয়া দত্ত বলেন, “রবিবার সংগঠনের ১০ জনের একটি কমিটি তৈরি হয়। ওই কমিটিতে রয়েছেন সুশান্ত। এ দিন যারা ওদের মারধর করেছে তারা সুশান্তর কমিটিতে থাকা নিয়ে আপত্তি জানায়।” এদিকে, অন্য গোষ্ঠীর দাবি, এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাম করে কয়েক জন তাঁদের সদস্য প্রথম বর্ষের ছাত্র রাসেদ মণ্ডলের আই কার্ড কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। যাতে সে আসন্ন নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারে। বাধা দিলে রাসেদকে মারধর করা হয়।”
অশোকনগরের এই কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষ নতুন কথা নয়। নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা প্রায় রোজকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় ও জেলা তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, স্থানীয় দুই নেতার মদতেই কলেজে দু’টি গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। জেলা নেতৃত্ব দুই নেতাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিলেও সমস্যা মেটেনি। এ ব্যাপারে দলের জেলা পর্যবেক্ষক ও রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বিষয়টি মুকুল রায়, সুব্রত বক্সী ও শঙ্কুদেব পণ্ডাকে জানিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.