|
|
|
|
নদীর জল তুলে সেচের ব্যবস্থা সংস্কারে উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর
|
কৃষিকাজে নদীর জল তুলে সেচের ব্যবস্থা বা ‘রিভার লিফট ইরিগেশনে’ (আরএলআই) আগেই জোর দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। দীর্ঘ দিন বেহাল পড়ে থাকা এই সেচ-ব্যবস্থাকে সচল করতে বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দও করেছিল। এমনকী বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় বেশ কিছু নতুন প্রকল্প গড়ে তোলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এ বার জঙ্গলমহলের আরও দু’টি ব্লকে ৪টি আরএলআই প্রকল্প সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হল।
এই প্রকল্পে নদী থেকে জল তুলে জমিতে সেচ দেওয়া হয়। কিন্তু নদীর ধারে উপযুক্ত পরিকাঠামো না-থাকায় প্রকল্পগুলি অনিয়মিত ভাবে চলছিল। এ বার পরিকাঠামো তৈরি করে তা নিয়মিত করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিকারিক প্রণব ঘোষ বলেন, “সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
এই জেলায় সেচের ক্ষেত্রে আরএলআই-এর যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, তা বোঝা গিয়েছিল ২০১০-এর খরার সময়। যে সময়ে শুকিয়ে গিয়েছিল সেচবাঁধ ও পুকুরগুলি। জলস্তর এতটাই নীচে নেমে গিয়েছিল যে, গভীর নলকূপ থেকেও সেচের জন্য জল তোলা যাচ্ছিল না। ফলে একরের পর একর জমির ধান সেচের অভাবে নষ্ট হয়েছিল। বহু চাষি চাষ-ই করতে পারেননি। কেন সেচের মাধ্যমে ফসল বাঁচানো যায়নি, তার তদন্তে প্রশাসন জানতে পারে, বেশির ভাগ আরএলআই-ই বিকল হয়ে পড়েছিল। যে গুটিকয় আরএলআই চলছিল তারও উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় সেগুলি অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল। তার পরেই আরএলআই প্রকল্প ঢেলে সাজার উদ্যোগ নেয় সরকার। জেলা প্রশাসনও গুরুত্ব দিয়েই নতুন আরএলআই প্রকল্প তৈরির পাশাপাশি পুরনো বিকল হয়ে যাওয়া আরএলআইগুলিকে সচল করা, পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেয়।
এ বার সাঁকরাইল ব্লকের কুবদা আরএলআই প্রকল্প ঢেলে সাজার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে ৪০০ মিটার পাইপলাইনে ১৫ হেক্টর জমিতে সেচের সুযোগ রয়েছে। সেখানকার আরএলআই ব্যবস্থাপনা সচল করতে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সাঁকরাইলের হনুমন্তনেগুড়িয়া আরএলআইয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যে টাকায় প্রকল্পের কাছে একটি গুদাম তৈরি করা হবে। যেখানে প্রকল্প সচল রাখার যাবতীর সরঞ্জাম (তেল, মোবিল প্রভৃতি) সুরক্ষিত রাখা হবে। একই ভাবে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের মহাপাল-১ ও ২ আরএলআই প্রকল্পের পরিকাঠামো উন্নয়নেও ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানেও তৈরি হবে গুদাম। রাখা হবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ আরএলআই প্রকল্পই ডিজেলে চলে। স্বাভাবিক ভাবেই ডিজেল, মোবিল ও পাম্প চালানোর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়মিত নিয়ে যাওয়ার পরে তা চালানো যায়। এ ক্ষেত্রে কর্মীদের মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন সময়ে এটা নেই, সেটা নেই বলেও প্রকল্প বন্ধ রেখে দেওয়া হয়। এ বার স্থানীয় গুদামেই সমস্ত সরঞ্জাম রাখার নির্দেশ দিচ্ছে প্রশাসন। যাতে প্রয়োজন হলেই পাম্প চালিয়ে সেচের ব্যবস্থা করা যায়। |
|
|
|
|
|