ফুল-পান-সব্জি চাষে ক্ষতিপূরণ সামান্যই, ক্ষোভ
দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সাহায্যের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে চাওয়া হয়েছিল সাড়ে তিন কোটি টাকা। দুর্যোগের প্রায় ছ’মাস পরে মিলেছে মাত্র ১৫ লক্ষ!
এই সামান্য টাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ক্ষতিগ্রস্ত পান, ফুল ও সব্জি চাষিদের কী ভাবেই বা দেওয়া হবে, কতটুকু কাজে লাগবেসে নিয়ে মহাফাঁপরে জেলা উদ্যানপালন দফতর। রাজ্য সরকারের অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলা পরিষদও। তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন যেমন বলেন, “বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পান, ফুল ও সব্জি চাষের পরিমাণ এই জেলায় খুব বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় জেলার জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তা অত্যন্ত কম।” জেলা পরিষদের তরফে ওই বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করে রাজ্যের উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রীকে ইতিমধ্যে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘোড়ইয়েরও বক্তব্য, “যে পরিমাণ সাহায্য চাওয়া হয়েছিল তার তুলনায় আর্থিক বরাদ্দ কম হয়েছে। ফলে কৃষকদের সাহায্য দেওয়া নিয়ে সমস্যা থাকছেই। যা বরাদ্দ হয়েছে তা দিয়েই সাহায্য করা হবে।”
জেলা পরিষদ ও উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর অগস্টে অতিবৃষ্টি ও বন্যার ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, পাঁশকুড়া, ময়না ও পটাশপুর ব্লক-সহ বিভিন্ন এলাকায় পান, সব্জি ও ফুল চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। উদ্যানপালন দফতরের হিসেব অনুযায়ী ফুল চাষে ১০ কোটি ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, সব্জি চাষে ৯ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা এবং পান চাষে ১ কোটি ৮৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ফসল নষ্ট হয়। সব মিলিয়ে ক্ষতির আর্থিক-মূল্য ২১ কোটি টাকারও বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চাষে সাহায্য করার জন্য জেলা উদ্যানপালন দফতর মূলত কৃষি-সহায়ক সামগ্রী দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য উদ্যানপালন দফতরের কাছে ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা সাহায্য চেয়েছিল। ২০১১-এর ১৭ অগস্ট ক্ষতির হিসেব জানিয়ে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্যের জন্য রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয় জেলা উদ্যানপালন দফতর। সম্প্রতি রাজ্য উদ্যানপালন দফতর ওই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কৃষিসহায়ক সামগ্রী দিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। অথচ, ওই একই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য ১১টি জেলার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা, উত্তর ২৪ পরগনা ৬৫ লক্ষ টাকা, বর্ধমান ৫০ লক্ষ টাকা, পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য ৩২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যায় ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কোনও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সার, অনুখাদ্য ও কীটনাশক দিয়ে প্রধানত চাষে সাহায্য করা হবে। কিন্তু সরকারি সাহায্য কবে পৌঁছবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে কৃষকসংগ্রাম পরিষদ। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “জেলায় গত বছর জুন ও অগস্টে দু’দফায় বন্যা ও অতিবর্ষণে ধান চাষের পাশাপাশি পান, ফুল ও সব্জি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের। কিন্তু তার পর আট মাস কাটতে চলেছে অথচ সবে মাত্র সরকার টাকা বরাদ্দ করেছে। তাও প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য।” নারায়ণবাবুর অভিযোগ, “বাম সরকারের সঙ্গে তো কোনও পার্থক্যই নেই। কৃষকদের সাহায্য করার জন্য টাকা বরাদ্দ করতেই ছ’মাস পার হয়ে গিয়েছে। ফলে ওই সাহায্যের ছিটেফোঁটা চাষিদের কাছে কবে পৌঁছবে তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.