কনকাবতী
অর্থ ও উদ্যোগের অভাবে সভাগৃহ তৈরির কাজ বন্ধ
র্থের অভাবে সভাগৃহ তৈরির কাজ বন্ধ থাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের কনকাবতীতে। ফের কবে কাজ শুরু হবে, কী ভাবেই বা প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান হবে--সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছেও। মেদিনীপুর সদর পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগেই বছর কয়েক আগে এখানে সভাগৃহ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। শুরুতে কাজ এগিয়েওছিল দ্রুত গতিতে। কিন্তু, পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি যা তাতে আগে যে কাজ হয়েছে, তা-ও বেকার হয়ে যাওয়ার মুখে! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এ ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি। এ ভাবে কাজ বন্ধ হয়ে থাকার কথা নয়। কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করব।”
এক সময়ে জেলার বিভিন্ন ব্লকেই সভাগৃহ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল প্রশাসনিক ভাবে। পিংলা, কেশিয়াড়ির মতো এলাকায় ইতিমধ্যেই সভাগৃহ তৈরি হয়েছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, সভাগৃহ তৈরি হলে এলাকার মানুষই উপকৃত হন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান করা যায়। অনেক লোকজন জড়ো হয়ে এক সঙ্গে অনুষ্ঠান দেখতে-শুনতে পারেন। বিভিন্ন ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগেই সভাগৃহ তৈরির কাজ হয়েছে।
অসম্পূর্ণ সভাগৃহ। কনকাবতীতে নিজস্ব চিত্র।
সমিতিগুলি বিভিন্ন ভাবে এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করেছে। কোনও ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ অর্থ সাহায্য করেছে। কোনও ক্ষেত্রে আবার সাংসদ, বিধায়কের তহবিল থেকেও অর্থ সাহায্য এসেছে। জেলা পরিষদের এক আধিকারিকের কথায়, “কোনও একটি তহবিল থেকে সভাগৃহ তৈরির প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া মুশকিল। সে জন্যই বিভিন্ন ভাবে এই অর্থ সংগ্রহ করতে হয়। উদ্যোগ থাকলে প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে কোনও সমস্যাই হয় না।” এ ভাবেই কেশিয়াড়িতে তৈরি হয়েছে ‘রবীন্দ্র ভবন’। পিংলায় তৈরি হওয়া সভাগৃহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রবীন্দ্র সদন’। কেশিয়াড়ির ক্ষেত্রে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা। পিংলায় খরচ হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগেই কনকাবতীতেও সভাগৃহ তৈরির পরিকল্পনা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু, এখন ওই পরিমাণ অর্থে সভাগৃহ তৈরি অসম্ভব। কারণ, নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম সরঞ্জামের দামই বেড়েছে। কিছু সরঞ্জামের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে, এলাকার মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মহাদেব মাইতি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই কাজ বন্ধ। এখানে সভাগৃহ তৈরি হলে ভালই হত। শুনেছিলাম, দ্রুত কাজ হবে। কিন্তু, কোথায় কী! উদ্যোগের বড় অভাব।”
শুধু কনকাবতীর ওই বাসিন্দাই নন, জেলা প্রশাসনের একাংশ আধিকারিকও স্বীকার করছেন, শুধু অর্থের অভাবে কাজ বন্ধ নেই। এ ক্ষেত্রে উদ্যোগেরও অভাব রয়েছে। চেষ্টা করলে বিভিন্ন তহবিল থেকে সভাগৃহ তৈরির জন্য অর্থ পাওয়া যেতে পারে। কেন প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান না-করেই কাজ শুরু হয়েছিল, সেই প্রশ্নও উঠেছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “অডিট রিপোর্টেও এই প্রশ্ন উঠতে পারে।” ‘গাফিলতি’র অভিযোগ মূলত যাঁদের বিরুদ্ধে, সেই মেদিনীপুর সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ললিতমোহন বাঁশি অবশ্য কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিতে রাজি নন। মেদিনীপুর সদরের বিডিও অয়ন নাথ অবশ্য বলেন, “কেন কাজ বন্ধ হয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি। ফের কাজ শুরুর চেষ্টাও হবে।” এই আশ্বাসই এখন ভরসা কনকাবতী ও তার আশপাশ এলাকার মানুষের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.